নানা সংকটে ৭ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত চালু হয়নি কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রম। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেডিকেল কলেজটির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় একদিকে উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা, অন্যদিকে বাস্তবমুখী জ্ঞানার্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। ওই বছরই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ৭ বছর পর, অবকাঠামোর সব কাজ শেষ হয়ে এলেও অবসান হয়নি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ। ক্ষেত্র বিশেষে তা আরও বেড়েছে। চিকিৎসার প্র্যাকটিক্যাল ও থিউরিক্যাল জ্ঞানের জন্য, স্থায়ী-অস্থায়ী দুক্যাম্পাসেই ছোটাছুটি করতে হয় তাদের।
অধ্যক্ষ অনুপস্থিত থাকায় অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকসহ ৬৮ জন চিকিৎসক প্রায়ই কর্মক্ষেত্রে থাকেন না। নিয়ম অনুযায়ী কলেজে ক্লাস নেওয়ার পর তাদের জেলার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা। তবে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষক নির্ধারিত দিনে পাঠদান শেষে অন্যত্র চলে যান। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই ৫০০ শয্যার হাসপাতালে যেসব চিকিৎসা-প্রযুক্তি রয়েছে, তা নেই অস্থায়ী ক্যাম্পাস ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে। মেডিকেল কলেজে যে মানের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা শিক্ষক থাকেন, সেই মানের শিক্ষা তারা পাচ্ছেন না। তারা শিগগিরই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কলেজে কর্মকতা ও কর্মচারিদের ১৪৪টি পদ থাকলেও ৩১টি পদ শূন্য রয়েছে। কর্মরতদের মধ্যে ১৮ জন আবার কাজ করছেন প্রেষণভিত্তিতে। অন্যদিকে হাসপাতালের ৪৯৯টি পদের বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি একজনকেও। তাছাড়া প্রকল্পভুক্ত নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন কাজের জন্যও ২৭৮ পদে নিয়োগ জরুরি।
তবে হাসপাতাল চালুর বিষয়ে আশার বাণী শোনালেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. সজল কুমার সাহা। তিনি জানান, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না দেয়ায় এবং কিছু কিছু অবকাঠামো নির্মাণ কাজ বাকি থাকায় এই হাসপাতালটি চালু করতে বিলম্ব হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সব সংকট সমাধান করে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা ও মানসম্মত চিকিৎসা-শিক্ষা নিশ্চিতে হাসপাতালটি চালু করা হবে।