চলন্ত ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেয়ায় ডা. রাফিউল সিরাজ নামে এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ওই ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ডাক্তাররা।
জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও জেনারেল হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. রফিউল সিরাজ বলেন, ২১ জুন বিকেল ৫টায় মনতলা স্টেশনে ট্রেন থামতেই জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে ট্রেনে ওঠে ফুঁকতে থাকেন এক ব্যক্তি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সিগারেটের ধোঁয়া অসহনীয় লাগছিল। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে ধূমপান না করার জন্য তাকে অনুরোধ করলাম। তিনি তো কথা শুনলেনই না বরং উদ্যত হয়ে আমাদের বললেন, ‘তোদের বাড়ি কই, আমারে চিনস? দাঁড়া সামনের স্টেশনে তোদের সব কয়ডারে বানামু।’
ডা. রফিউল সিরাজ আরও বলেন, তারপর যা হলো তার সঙ্গে সেই দৃশ্যগুলো এখনও ভুলতে পারছি না। ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে থামলে হঠাৎ ওই লোকটার ডাকে ২০-২৫ জন ট্রেনে উঠে আমাদের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর করে। এ সময় আমার কামরার অনেকেই পালিয়ে যায়। আমার সঙ্গে যারা ছিল তাদের ওই ম্যাজিস্ট্রেটের পায়ে ধরায়। আমি তার পা ধরতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানের একজন ডাক্তার বলে পরিচয় দেয়ার পরও ওই ম্যাজিস্ট্রেট তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলতে লাগলেন, কিসের মহামান্য? ওইখানে টুটুল নামে পুলিশের এক এসআই আমাকে জেলে ঢোকানো এবং ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়। সেই সঙ্গে আমাকে পা ধরতে বাধ্য করেন ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান, জেলা বিএমএর সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপতাালের অধ্যক্ষ ডা. সজল কুমার সাহা, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিয়া মো. ফেরদৌস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আজিজুল হক, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপতালের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নওশাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো. আসাদ উল্লাহ, জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের লেকচারার ডা. মো. রাফিউল সিরাজকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনজিৎ কুমার চন্দের বিচার দাবি করে বলেন, অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।