অনুভূতির জননেতা মরহুম সৈয়দ আশরাফ ভাই সবসময় আওয়ামী লীগে জামাত-শিবির ও রাজাকার পরিবার সন্তান-আত্মীয় অনুপ্রবেশ বিরোদ্ধে কঠোর ভূমিকায় ছিলেন। প্রায় প্রতিটি বক্তব্য-তে আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগে স্বাধীনতা বিরোধি ও তাদের স্বজনরা যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে ও দ্রুত শনাক্ত করে বহিষ্কার করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সহ প্রশাসনে স্বাধীনতা বিরোধি শক্তি ব্যাপকভাবে অনুপ্রবেশ করে। পাকি-পশ্চিমা গোয়েন্দা নিয়োজিত গোপন এজেন্ট বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুতি জাসদ-গণবাহিনী-সর্বহারা বাহিনীর ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অরাজকতার সুযোগে প্রশাসনে অনুপ্রবেরশকারী অপশক্তি ৭৫ সালে ১৫ আগষ্টে বিশ্ব ইতিহাসে নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে।
জাতির জনক ও জনক পরিবারের সকল-কে হত্যা করে লাখো শহীদের রক্ত ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে মহান স্বাধীনতার স্বপ্ন মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল। সেই সাথে পাকিস্তানি আদর্শের অনুগত সামরিক সরকার ক্ষমতায় বসিয়ে ৭১’র চেতনা-কে হত্যায় সকল প্রকার আয়োজন করে।
১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর জাতির জনক’র সহচর জাতীয় চার নেতাকে কারাগারে নিষ্ঠুর হত্যা করার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কফিন বন্দি করা হয়। এরপর পরিকল্পিত ভাবে মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার সহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে চিরতরে বিনাশ করার জন্য হত্যাকাণ্ড মিশন চালু করে পাকিস্তানি আদর্শের খুনি জিয়ার সামরিক সরকার।
বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য কুৎসিত অন্ধকার কালো মেঘের ভিতর হারিয়ে যায়। সৃষ্টির নিয়মেই রাত শেষে ভোর হয়, অন্ধকার দূর করতে সূর্য উঠে পূর্ব আকাশে।
সূর্যের পবিত্র আলোয় আলোকিত হয় আধার, তেমনি জাতির জনক কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে খুনি জিয়ার সামরিক সরকারের রক্ত চক্ষু ও মৃত্যুর হুমকি উপেক্ষা করে বাংলার মাটিতে পা রাখেন। মুহূর্তেই সারা বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোটি মানুষের দেহের রক্ত প্রবল গতিশীল হয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়ন করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে মাঠে নামে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তারপর, আপোসহীন দীর্ঘ সংগ্রামে প্রবল প্রতিরোধে স্বাধীনতা বিরোধি শক্তির মসনদ নড়বড় হয়। আবারো নারকীয় হত্যাকাণ্ডের চক্রান্ত শুরু করে দেশ বিরোধি অপশক্তি। জননেত্রী শেখ হাসিনা কে হত্যার লক্ষে কয়েকবার আক্রমন করে অপশক্তি। কোটি মানুষের দোয়ায় আল্লাহ রহমতে প্রতিটি আক্রমন ব্যর্থ হয়। এসব আক্রমনে জননেত্রীকে রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী।
প্রতিকূলতা আর অসংখ্য বাধার দেয়াল অপ্রতিরোধ্য শক্তি দিয়ে ভেঙ্গে শুরু হয় বাংলার অক্সিজেন বিশুদ্ধ করার নতুন সংগ্রাম। শুরু হয় স্বাধীনতা বিরোধি যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের বিচার প্রক্রিয়া। মুহূর্তেই শুরু হয় আবারো নানামুখী চক্রান্ত, বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বিদেশী চাপ প্রয়োগ আর ব্যাপক নাশকতা। বিশ্বকে দেখিয়ে দেয় জাতির জনক কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, বাঙালি বীরের জাতি, কখনই অন্যায় কাছে মাথা নিচু করেনা। যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলার অক্সিজেন বিশুদ্ধ হয়।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে। অপ্রতিরোধ্য এই গতি অল্পকিছু দিন পরেই বিশ্বকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে প্রথম স্থানে রাখবে।
কিন্তুু…. আবারো সেই পাকি-পশ্চিমা গোয়েন্দা এজেন্ট ও জাসদ চক্র সক্রিয় চক্রান্ত শুরু করেছে। সাপের খোলস বদল হয় কিন্তুু দাঁতে প্রাণঘাতী বিষ অক্ষুন থেকে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে দলে লুকিয়ে থাকা গোপন এজেন্টের মাধ্যমে সহযোগী সংগঠন সহ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে স্বাধীনতা বিরোধি অপশক্তি। সরকারের প্রশাসনিক প্রতিটি সেক্টরে অপশক্তির প্রবেশ সবচেয়ে বেশি যা অশনিসংকেত।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ-সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেবের আগের দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে তিনি বলেছেন কোন যুদ্ধাপরাধী পরিবারের প্রজন্মরা আওয়ামী লীগে সদস্যপদ পাবেনা। যা সত্যিই যুগোপযোগী ও প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত।
জনাব কাদের সাহেবের দেয়া আগের বক্তব্য ছিল, যুদ্ধাপরাধী পরিবারের প্রজন্মরা আওয়ামী লীগে সদস্যপদ পাবে। এমন বক্তব্য সত্যিই কাম্য ছিলনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকলের কাছে। কারন এটা অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সকল উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করতো, এমনকি ওনার এমন বক্তব্যের মাধ্যমে অনুপ্রবেশকে বৈধতা দেয়ার অংশ বলেই ধারণা করেছিল জাতির পিতার প্রতিটি সন্তনরা।
এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই স্থগিত করতেই হবে দাবীতে অনলাইন ও অফলাইনে সক্রিয় ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা। সিদ্ধান্ত বা বক্তব্য প্রত্যাহার করায় জনাব কাদের সাহেব কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আশা করছি, এখন পর্যন্ত প্রতিটি অনুপ্রবেশকারী সনাক্ত করে বহিষ্কারের মাধ্যমে অঙ্গীকার করতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই স্বাধীনতা বিরোধি অপশক্তির প্রজন্ম আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবেনা।
অন্যথায়, আরেকটি ১৫ আগষ্ট অনিবার্য। মনে রাখবেন…. “” রাজাকারের বিবির বাচ্চারা সবগুলোই শিবির “”‘
সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়
সাধারণ-সম্পাদক
সদর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কিশোরগঞ্জ।