মহাবীর ঈসা খানের অধস্তন পুরুষ জিলকদর খাঁর স্মৃতি বিজড়িত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্স খুললে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা পাওয়া গেছে বলে মসজিদ কমিটি
জানিয়েছে।
শনিবার (১৩ই জুলাই) বিকালে গণনা শেষে এই টাকার হিসাবের বিষয়টি নিশ্চত করেন। দান বাক্সে নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়। এর আগে গত ১৩ই এপ্রিল দান সিন্দুক খোলার পর এক কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২শ’ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
গত ১৯শে জানুয়ারি পাওয়া যায় এক কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ টাকা। এছাড়া গত বছরের ১৩ই অক্টোবর দান সিন্দুক খোলার পর এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
অর্থাৎ গত এক বছরে পাগলা মসজিদে দান হিসেবে চার কোটি ৫০ লাখ ১৩ হাজার ৮০৮ টাকা পাওয়া গেছে। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে সোয়া লাখ টাকা মসজিদটিতে মানুষ দান করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার (১৩ই জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের
উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ৬০জন ছাত্রশিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকেরকর্মকর্তাগণ অংশ নেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন এর তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনোয়ার হোসেন ও মীর মো. আল কামাহ তমাল টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।
এছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, কমিটির সদস্য প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আনম নৌশাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. আসাদ উল্লাহ টাকা গণনার কাজ পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন। টাকা গণনার এই এলাহী কা- নিজ চোখে অবলোকন করতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদে ছুটে যান।
প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।