বেতন-ভাতার দাবিতে রবিবার (১৪ জুলাই) থেকে ভৈরব ও কটিয়াদী পৌরসভাসহ কিশোরগঞ্জের ৮ টি পৌরসভা ও দেশের ৩২৮টি পৌরসভায় সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদানের ঘোষণা না দেয়ায় তারা এই আন্দোলনে নামছেন।
বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ভৈরব থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা জানান কিশোরগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ভৈরব পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর।
তিনি তার লিখিত এক বক্তব্যে বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। ফলে তাদের পক্ষে স্ব-স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করা সম্ভব হবে না এবং নাগরিক সেবা প্রদান করাও সম্ভব হবে না। ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শুধু পাইপ লাইনে পানি সরবরাহ চালু রাখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাদশা আলমগীর আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আরো বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী পৌরসভা রাষ্ট্রীয় তথা সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং তাতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। শহর কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্নতা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পয়ঃনিষ্কাশন, সড়ক আলোকিত করা, ওয়ারিশান সনদ, নাগরিক সনদ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ, পরিবেশ ছাড়পত্র সনদসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ধরনের সেবা নাগরিকদের দিয়ে থাকে।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানি ভাতা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের দাবিতে তারা প্রায় দুই বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পৌরসভার নিজস্ব আয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের বিধান থাকলেও দেশের ৯০ ভাগ পৌরসভার পর্যাপ্ত আয় বা রাজস্ব না থাকায় বর্তমানে স্থান ভেদে ৩ থেকে ৬৬ মাস পর্যন্ত বেতন-ভাতা বকেয় রয়েছে। এ জেলার ৮টি পৌরসভার মধ্যে শুধু ভৈরব পৌরসভা ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভা ছাড়া বাকি ৬টিতেই দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে।
এদিকে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে যাওয়ায় পৌরসভার সেবাপ্রত্যাশী লোকজন সেবা নিতে এসে অফিসকক্ষে তালা ঝুলানো দেখে ফিরে যাচ্ছে। এতে করে চাকরি আবেদনকারীদের নাগরিক সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ, ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স, জায়গা জমি খারিজের ওয়ারিশান ও পারিবারিক সনদ, বিভিন্ন ধরণে প্রত্যয়নপত্র না পাওয়ায় জীবন যাপনে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে এলাকাবাসী চরম বিপদের মুখোমুখি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।