বিশ্বকাপের আগে থেকেই বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। বিশ্বকাপ চলাকালেও আম্পায়ারদের ভুল-ভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরক্ত হয়েছে ক্রিকেট সমর্থকরা। এমনকি বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে তুমুল সমালোচনাও হয়েছে।
বিশ্বকাপেই আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত পুরো ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বকাপের ফাইনালেই তো শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার সেই ওভার থ্রো-য়ে ছয় রান দেওয়া নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যেটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চাইলেন লঙ্কান আম্পায়ার।
বিশ্বকাপের পরও অব্যাহত রয়েছে আম্পায়ারদের ভুল কিংবা বাজে আম্পায়ারিং। অ্যাশেজের প্রথম টেস্টেও আম্পায়ারিং নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এক ক্যারিবীয় আম্পায়ার জোয়েল উইলসনেরই আটটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে ডিআরএসের মাধ্যমে। এসব কারণে এবার আর মাঠের আম্পায়ারদের ওপর পায়ের নো বল দেয়ার ক্ষমতা রাখছে না আইসিসি। নো বলের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আইসিসি ভরসা করতে যাচ্ছে টিভি আম্পায়ারের ওপর। সেই রকমই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে আইসিসি।
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইসিসি’র জেনারেল ম্যানেজার (ক্রিকেট অপোরেশনস) জিওফ অ্যালারডাইস বলেন, ‘২০১৬ সালে যে পদ্ধতি আনা হয়েছিল তা আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তৃতীয় আম্পায়ার বোলারের পায়ের নো বলের দিকে নজর রাখবেন। বোলিংয়ের সময় বোলারের পা পড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ছবি চলে যাবে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। তিনি জানাবেন মাঠের আম্পায়ারকে যে সেটি নো বল ছিল কি না। তিনি কিছু না জানালে বলটিকে নো বল ঘোষণা করা যাবে না।’
২০১৬ সালে ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার একটি একদিনের ম্যাচে এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ‘২০১৮ সালে শুধুমাত্র ছেলেদের একদিনের ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই ৮৪ হাজারের বেশি বল করা হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক ডেলিভারি নজরে রাখা খুবই কঠিন বলে জানিয়েছে আইসিসি। তাই আপাতত পরীক্ষামূলকভাবেই এই বছর কিছু কিছু ম্যাচে এই পদ্ধতি ব্যবহারের কথা ভাবছে আইসিসি।’
আইসিসি যদি এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে সফলতার দেখা পায়, তবে স্থায়ীভাবে পায়ের নো বল ঘোষণার জন্য টিভি আম্পায়ারকেই মূল দায়িত্ব দেয়া হবে।
মূলতঃ মাঠের আম্পায়ারদের ভুল বেশি মাত্রায় সামনে আসায় এই সিদ্ধান্ত আনার কথা ভাবছে আইসিসি। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে প্রযুক্তির উপর নির্ভরতাও। সেই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে খেলাকে আরও নির্ভুল ও নিখুঁত করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইসিসি।