কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদগাহটির ১৯২তম এ জামাত শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাত করা হয়।
সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় দেশের অন্যতম এ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. হিফজুর রহমান খান।
রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শটগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তিনটি গুলি জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে, দুইটি তিন মিনিট আগে এবং শেষটি জামাত শুরুর এক মিনিট আগে ছোড়া হয়।
নামাজ শেষে মোনাজাতে মাওলানা মো. হিফজুর রহমান খান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করেন। সেইসঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমান, সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জন্য দোয়া করা হয়। পরিশেষে তিনি দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নাজমুল ইসলাম সোপান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেযর মাহমুদ পারভেজ, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নৌশাদ খান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) -১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম শোভন খান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আতাউর রহমান, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল কাদির মিয়া প্রমুখ।
শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত শেষ করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব ছাড়াও মাঠে দায়িত্ব পালন করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের অনেক সদস্য।
জামাতের আগে প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশির মাধ্যমে গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরারও ব্যবস্থা রাখা হয়। মাঠ ও আশপাশ এলাকার আকাশে উড়ানো হয় ড্রোন। ড্রোনের মাধ্যমে মুসল্লিসহ সব কিছুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ মাঠের যাত্রা শুরু হয়। ওই বছরই ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেই ঈদের জামাতে মুসল্লির সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকেই উচ্চারণ বিবর্তনে বর্তমানে ‘শোলাকিয়া’ নামকরণ হয়েছে।