বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরো স্বচ্ছ ও সহজ করতে নতুন কমিশনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) পরিবর্তে গঠিত হবে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন বা এনটিএসসি।
বি্সিএস ক্যাডার এবং ননক্যাডার পদে সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ দানে কাজ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। সেটার আদলেই বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে এ কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহাম্মেদ।
তিনি বলেছেন, ‘মূলত বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরো বড় পরিসরে স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) আওতায় এ কার্যক্রম চলছে।
প্রাথমিকভাবে এনটিএসসি প্রোগ্রাম আকারে বছর দু’য়েক কাজ করবে। এর মধ্যে আইন তৈরি ও সেটি পাশ হবে। পাশাপাশি জনবল কাঠামো তৈরি করতে হবে। অফিস তৈরি করতে হবে। এসব মিলিয়ে নূন্যতম দুই বছর সময় লাগেব।’
তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ দুই বছর এভাবে কাজ চলবে। সবকিছু হয়ে গেলে কমিশনের পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আদলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব পদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করবে এ কমিশন। এর মাধ্যমে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ সকল পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
জানা যায়, এটি ২০১০ সালে সরকারের এডুকেশন পলিসিতে সন্নিবেশ করা হয়। কিন্তু নানা কারণে এটি কার্যকর হয়নি। এ কমিশনের সর্বোচ্চ পদটি হবে সাংবিধানিক পদ। তবে এ বিষয়ে আরো আলোচনা হবে। আগামী মাসে এর কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহাম্মেদ বলেন, ‘দুই বছর প্রোগ্রাম আকারে চলার পর এটি এনটিআরসিএ- এর পরিবর্তে পুরোপুরি এনটিএসসি হয়ে যাবে। আরো বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ হবে তখন। এক্ষেত্রে আরো দক্ষ জনবল পাওয়া যাবে। আরো দক্ষতার সঙ্গে তারা কাজ বাস্তবায়ন করতে পারবে। নানারকম পরিধি বাড়বে।’
শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএ গঠিত হয়। এটি ছিলো প্রার্থীদের প্রাক-যোগ্যতার সনদ।
এর আগে বেসরকারি স্কুল শিক্ষক নিয়োগে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির হাতে। পরে নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে ২০১৫ সাল থেকে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনটিআরসিএকে। ২০১৬ ও ২০১৮ সালে দুই দফায় শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ।