কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরাই কীটনাশক ও চোরাই কাজে ব্যবহৃত ১টি ট্রাক জব্ধ সহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় ৫ সদস্যকে আটক করেছে।
জানা যায়, একাধিকবার জেলা ও ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ এস আই হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্ত কুলিয়ারচর থানার সাহসী অফিসার এস আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ কুলিয়ারচর থানার মামলা নং-১৭(০৭)১৯ ইং এর সূত্রধরে সম্পূর্ণ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চোরদের অবস্থান নির্ণয় করে থানার এস আই মোঃ আজহারুল হক সহ একদল পুলিশকে সাথে নিয়ে গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ও রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দু’দিন সাড়সি অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার টঙ্গী পূবাইল এলাকা থেকে ১টি টাটা ট্রাক যাহার নং ঢাকা – মেট্রো-ড -১৪-৬২৬৫ সহ চোরাইকৃত গবাদি পশুর ভ্যাকসিন ও কীটনাশক জব্ধ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্তঃ জেলা চোরচক্রের সক্রিয় ৫ সদস্যকে আটক করে ।
আটককৃতরা হলো ট্রাকের হেলপার নরসিংদী জেলার মনোহরদি উপজেলার হাফিজপুর গ্রামের ফাইজ উদ্দিনের ছেলে সোহেল মিয়া (৩০), ট্রাক মালিকের শ্যালক নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি গ্রামের মৃত আঃ মজিদের ছেলে মোঃ মহসিন (৪৫), একই উপজেলার গকুলনগর গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে উজ্জল (৪৫), চোরাই মাল ক্রয়ের ব্যবসায়ী পিরিজপুর জেলার ভান্ডারীয়া উপজেলার মুদিরাকান্দা গ্রামের ফজলুল হক খাঁনের ছেলে মাহাবুব আলম খাঁন (৫০) ও তার ম্যানেজার নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার আফছার আলীর ছেলে মোঃ মুসলিম মিয়া (৫৫)।
পুলিশ জানায়, এই চোর চক্র দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে গভীর রাতে কীটনাশক ও মুরগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ব্যাটেনারী মেডিসিন ব্যবসায়ীদের দোকানের তালা ভেঙ্গে মালামাল চুরি করে আসছে। চুরির কাজে তারা তাদের একটি ট্রাক ব্যবহার করে থাকে। চোরাই মালামাল প্রতিনিয়ত মাহাবুব আলম খাঁনের দোকানে নিয়ে বিক্রি করছে বলে তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। আটককৃতদের রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে।
উল্লেখ, গত কয়েকদিন আগে কুলিয়ারচর উপজেলার ডুমরাকান্দা বাজারে মেসার্স সিয়াম ব্রয়লার হাউজ নামের একটি কীটনাশক দোকনে দুর্ধর্ষ চুরি হয়। চোরচক্র ওই দিন গভীর রাতে দোকানের সার্টারের তালা ভেঙ্গে প্রায় লাখ টাকার কীটনাশক ও ব্যাটেনারী মেডিসিন নিয়ে যায়। এই ঘটনায় দোকনের স্বত্তাধিকারী লাল বাদশা গত ২৭ জুলাই বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-১৭(০৭)১৯ ইং। এধরনের আরও অনেক ঘটনা প্রায়ই এলাকায় ঘটেছে বলে পুলিশ জানান। এরপর থেকে পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারে আটককৃত মাহাবুব আলম খান একটি চোরচক্র লালন- পালন করে চুরির কীটনাশক ও ব্যাটেনারী মেডিসিন কম দামে কিনে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এর সূত্র ধরে খোঁজ পেয়ে শনিবার ও রোববার দুদিন অভিযান চালিয়ে চোরাই মাল ও ট্রাক সহ ৫ জনকে আটক করে কুলিয়ারচর থানা পুলিশ।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদার জানান, আটককৃত চোরচক্র দীর্ঘদিন যাবত কীটনাশক ও ব্যাটেনারী পণ্যের দোকানের তালা ভেঙ্গে লাখ লাখ টাকার মাল চুরি করছে। চোরচক্রের হোতা হলো মাহাবুব আলম খান। অভিযানে ট্রাক ও চোরাই পণ্যসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান দীপু জানান, চক্রটি একটি শক্তিশালী চক্র। এদের আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কীটনাশকের দোকানগুলোতে দুধর্ষ চুরি আসছে। অনেকদিন চেষ্টার পর সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ । এ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।