বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার পলাতক আট আসামির মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী এ আদেশ দেন।
এছাড়াও এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তদের নিয়ে দাখিল করা অভিযোগপত্রের প্রধান অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী ও ৪ নম্বর অভিযুক্ত রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক তিন আসামির জামিন আবেদন শিশু আদালতে পাঠানো হয়েছে।
যেসব আসামির মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলো প্রাপ্তবয়স্ক তিন নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ছয় নম্বর আসামি মুসা, অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, তিন নম্বর আসামি আবু আব্দুল্লাহ রায়হান, ছয় নম্বর আসামি নাইম, নয় নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান নিয়ামত, ১০ নম্বর আসামি সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মহিব্বুলাহ ও ১২ নম্বর আসামি প্রিন্স মোল্লা।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক কিসলু বলেন, রিফাত হত্যা মামলার ধার্য তারিখ থাকায় আজ বরগুনা জেলা কারাগারে থাকা সাত আসামিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর জামিনে থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও আরিয়ান হসেন শ্রাবণ আদালতে হাজির হন।
তিনি আরো জানান, আদালতের কার্যক্রম শেষ হলে কারাগারে থাকা আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার পলাতক আট আসামির মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তদের নিয়ে দাখিল করা অভিযোগপত্রের প্রধান অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী ও চার নম্বর অভিযুক্ত রেজোয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়ের জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
আগামী ১৬ অক্টোবর এ মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে পারেননি। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত করে বরগুনা থানায়মামলা করেন। পরে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টায় মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপর গত ২৯ আগস্ট দুই শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। গত ৩ সেপ্টেম্বর মিন্নি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।