জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবন অবরুদ্ধ করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৈরিকৃত উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ থেকে আন্দোলনকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নেয়।
সমাজতান্ত্রীক ছাত্রফ্রন্ট (মাক্সবাদী) সভাপতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর এর অন্যতম ছাত্রসংগঠক মাহাথির মুহাম্মদ অবস্থান কর্মসূচীতে বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে আসছি। এই প্রশাসন আমাদের উপর হামলা করেছে, তারপর অজ্ঞাতনামা মামলা দিয়েছে। আমরা উপাচার্যকে পদত্যাগ করার সুযোগ দিয়েছি কিন্তু তিনি স্বৈরাচারী কায়দায় সকল অভিযোগকে নিজের দালাল বাহীনি দ্বারা মোকাবেলা করতে চেয়েছেন। আমরা এই উপাচার্যর অপসারণ ছাড়া এই স্থান ত্যাগ করবো না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ. স. ম. ফিরোজ উল হাসানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে সোমবার দুপুরে জাবির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী আমাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক বিষয় ও জটিলতা সম্পর্কে জানতে চান। আমরা বর্তমান উপাচার্যের দুর্নীতি, অনিয়ম, অযোগ্যতা, একগুঁয়েমি ও অগণতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার বিষয় ও প্রমাণ তুলে ধরি। তিনি এসব বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন বলে জানান।’
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে প্রায় আড়াই মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের ‘মধ্যস্থতায়’ ছাত্রলীগকে বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের দাবিতে এ আন্দোলন শুরু হয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় গত ২ অক্টোবর থেকে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে গত রোববার থেকে সপ্তাহব্যাপী লাগাতার অবরোধ-ধর্মঘট পালন করেছেন তাঁরা। টানা অবরোধ ও ধর্মঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার রাত আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর হেয়ার রোডে শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবনে আন্দোলনকারী সাতজন শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।