ভারতীয় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি এবার দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব নিয়েছেন। বোর্ড সভাপতির চেয়ারে বসার পর নিজ শহর কলকাতায় আয়োজন করতে চলেছেন দিবারাত্রির টেস্ট। ঐতিহ্যবাহী এই ম্যাচকে সামনে রেখে ইডেন গার্ডেন্সে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশ দলের হয়ে একটি মাত্র টেস্ট খেলা ক্রিকেটার বিকাশ রঞ্জন দাসকে।
আগামী ২২ নভেম্বর হতে যাওয়া ম্যাচ দিয়েই প্রথমবারের মত দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে নামবে ভারত আর বাংলাদেশ। একই সাথে উপমহাদেশে প্রথমবারের মত ফ্লাডলাইটের আলোর নিচে মাঠে গড়াবে কোন আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ। এই ম্যাচকে সামনে রেখে রীতিমত উৎসবে মেতেছে কলকাতা। এরই মধ্যে দুই দেশের একাধিক তারকাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌরভ।
যেখানে ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম যে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলো বাংলাদেশ দল। গাঙ্গুলির ইচ্ছে, সেই ম্যাচের দুই দলের খেলোয়াড়রাও উপস্থিত থাকবেন আসন্ন ইডেন টেস্টে। ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা শেষে সংবর্ধনা দেওয়া হবে সবাইকে। সেই আমন্ত্রিতদের তালিকায় ডাক পেয়েছেন বিকাশও।
বিকাশ ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম বদলে রেখেছেন মাহমুদুল হাসান। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার সরারচর গ্রামে।
নাম উল্লেখ করে চিঠি এসেছে সৌরভের কাছ থেকে। যেখানে ইডেনে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই আপাতত স্বপ্নের ঘোরে বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার বিকাশ রঞ্জন দাস। বলা যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট নদীর স্রোতে হারিয়ে যাওয়া এক ক্রিকেটার তিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক প্রথম টেস্টের সাক্ষী ছিলেন। সেই বিকাশের বিশ্বাসই হচ্ছে না, সৌরভ এখনো তাঁকে মনে রেখেছেন।
ঐ একটা মাত্র ম্যাচ খেলেই জাতীয় দলের বাইরে চলে যেতে হয়েছে বিকাশকে। সেই ম্যাচের জন্যই এতোবড় সম্মাননা পেতে চলেছেন তিনি। ম্যাচের স্মৃতি মনে করে বিকাশ বলেন, ‘সেই স্বপ্নস্মৃতি কি ভোলা যায়! সবই তো মনে পড়ে। শান্ত (হাসিবুল হোসেন) ভাই প্রথম ওভার করেছিল। অন্য প্রান্ত থেকে শুরু করেছিলাম আমি। প্রথম বলটা করেছিলাম সদাগোপান রমেশকে।’
‘ম্যাচের আগে যখনই ভাবতাম সৌরভ-শচীনকে বল করব, বিশ্বাসই হচ্ছিল না। সত্যি কথা বলতে ভীষণ রোমাঞ্চিত ছিলাম। রমেশকে বোল্ড করলাম। প্রথম ইনিংসে আমরা ভাল করলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের কারণে ম্যাচটা আর পাঁচদিনে টেনে নিয়ে যেতে পারিনি।’ সাথে যোগ করেন তিনি।
প্রথম টেস্টের পরেই চোট। তারপর অনেকটাই আড়ালে চলে যান বিকাশ। সেই সময়কার কথা মনে পড়লে আক্ষেপ, যন্ত্রণা এখনও কুঁড়ে কুঁড়ে খায় এই তাকে। ভারতীয় এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপকালে নিজের হতাশার কথা লুকাননি এই ক্রিকেটার।
বিকাশ জানান, ‘বল করার পর পিঠে প্রচুর ব্যথা হতো। সেটা অসহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা মানসিকভাবে আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ক্রিকেট ভবিষ্যত নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সেই সময় বোর্ডের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। সেখান থেকে কোনরকম সহযোগিতা পাইনি। পেলে হয়তো অকালেই বিদায় জানাতে হত না।’