বরগুনায় এক স্কুল ছাত্রীকে তিন বখাটে পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তিনজনকেই যাবজ্জীন সশ্রম কারাদণ্ড এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মো. হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো বরগুনা সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামের দুলাল ফরাজির ছেলে মিলন ফরাজি, একই উপজেলার বদরখালী গ্রামের মনিন্দ্র গোমস্তার ছেলে মনোজ গোমস্তা এবং বদরখালী গ্রামের আবদুল কাদের সিকদারের ছেলে কালাম সিকদার। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, একই উপজেলার বদরখালী গ্রামের ওই স্কুল ছাত্রীর ভাই দুলাল চন্দ্র মিত্র বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেন। তার নাবালিকা বোন বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না এন এস হাই স্কুলে অষ্টম শেণিতে লেখাপড়া করে। বাদীর বোন ওই বছর ২২ আগষ্ট দুপুর অনুমান আড়াইটার সময় স্কুল থেকে নিজ বাড়ীতে ফেরার পথে আবদুর রব মেম্বরের বাড়ীর পাশের রাস্তায় পৌছালে আসামি মিলন ফরাজি ও মনোজ গোমস্তা বাদীর বোনকে ছুরি দিয়ে খুনের ভয় দেখিয়ে রব মেম্বরের পানের বরজের উত্তর পাশের বাগানে নিয়ে স্কুল ড্রেস খুলে প্রথমে মিলন ফরাজি জোর করে ধর্ষণ করে। ওই সময় মনোজ গোমস্তা তার মোবাইলে ধর্ষণ করার দৃশ্য ধারণ করে। পরে মনোজ গোমস্তা স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। সেই দৃশ্য মিলন ফরাজি তার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে। অপর আসামি কালাম রাস্তায় দাড়িয়ে পাহারা দিয়ে ধর্ষণের সহায়তা করে। আসামিরা স্কুল ছাত্রীকে হুমকি দেয়, কারো কাছে বলে দিলে উলঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে তার মান সম্মান নষ্ট করবে।
কিছুদিন পর ওই আসামিরা আবার স্কুল ছাত্রীকে স্কুলে যাবার পথে কুপ্রস্তাব দেয়। স্কুল ছাত্রী কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে আসামিরা স্কুল ছাত্রীর ধারণকৃত অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ও আসামিদের বন্ধুদের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়। স্কুল ছাত্রীর ভাই দুলাল মিত্র জানতে পেরে বরগুনা থানায় মামলা করে। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার পুলিশ পরিদর্শক পুলক চন্দ্র রায় তদন্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ওই বছরের ২৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি মোস্তফিজুর রহমান বাবুল এবং আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কমল কান্তি দাস। আসামি মিলন বলেন আমাদেরকে শত্রুতা মুলক ভাবে মামলায় জড়িত করেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করবো।