muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

বিশ্ববিদ্যালয় দেশ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রস্থল : রাষ্ট্রপতি

বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রস্থল হিসেবে অভিহিত করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

তিনি বলেছেন, ‘‘জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি মূল্যবোধ লালন, নীতি-নৈতিকতা, দেশপ্রেম উৎসারিত করার শ্রেষ্ঠক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে যুক্তি ও সত্যের অনুসন্ধান, নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন এবং মানব কল্যাণে তার ব্যবহার করা।’’

রোববার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন জাতিকে যেমন অনুপ্রাণিত করে, জাতীয় জীবনে উদ্যম ও গতিশীলতা সৃষ্টি করে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপ্রত্যাশিত সংবাদ ও ঘটনা জাতির মননে এবং সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।’’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘‘আদর্শ শিক্ষক-গবেষক জাতির মূল্যবান সম্পদ, অনুসরণীয় আদর্শ। শিক্ষক-গবেষকদের জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রজ্ঞা ভবিষ্যৎ জাতি গঠনের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। তাই শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রয়োজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও জ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগী শিক্ষকমণ্ডলী, যারা নিজেরা নিরন্তর সর্বশেষ জ্ঞান চর্চায় রত থেকে সেই জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করবেন। শিক্ষক যখন তার মহান আদর্শ থেকে দূরে চলে যান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণে শিক্ষকরা নিবেদিত থাকবেন জাতি তা প্রত্যাশা করে।’’

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি সফল গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত জ্ঞান মানবজাতির অশেষ কল্যাণ বয়ে আনতে পাবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘গবেষণার ফল যাতে লাইব্রেরিতে বন্দি না থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগে তা নিশ্চিত করতে হবে।’’

তিনি খুলনা অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবন ও সামুদ্রিক সম্পদ সমৃদ্ধ বিশাল উপকূলের মূল্যবান সম্পদ নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণায় অধিক মনোনিবেশের আহ্বান জানান।

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘তোমরা আজ গ্র্যাজুয়েট, দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতাকে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নিয়োজিত করতে হবে। তোমরা এ দেশকে এগিয়ে নেবে সুন্দর আগামীর পথে, সমৃদ্ধির পথে। মনে রাখবে এ দেশ ও সমাজ আজ তোমাদের এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তাদের কাছে তোমরা ঋণী। তোমরা তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও মনন দিয়ে দেশ মাতৃকার কল্যাণ করতে পারলে সে ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে।’’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ, সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. অনুপম সেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।

৬ষ্ঠ সমাবর্তনে ৪ হাজার ৪৭৮ জনকে স্নাতক, ২ হাজার ৫৩০ জনকে স্নাতকোত্তর, ৫ জনকে এম ফিল ও ৮ জনকে পিএইচডি এবং ১৭ জনকে পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন অ্যাডুকেশন ডিগ্রি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ২৩ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল দেয়া হয়।

এর আগে রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং  তিনি সমাবর্তন শোভাযাত্রাসহ মঞ্চে আসন গ্রহণ করলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের অদূরে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি।

Tags: