muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

শিক্ষা

অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের ঘটনায় ১৬ শিক্ষার্থীর শাস্তি কার্যকর

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে টেনে-হেঁচড়ে পুকুরের পানিতে নিক্ষেপের ঘটনায় চারজনের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

এ ছাড়া পাঁচজনের সনদ আটকে দেয়া হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সাতজনকে অন্যত্র বদলি করে দেয়া হবে। মোট ১৬ জন ছাত্র এ ঘটনায় শাস্তি পাচ্ছে; তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

মিডটার্মে অকৃতকার্য ও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা দুই শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিনের ওপর চাপ দেন তারা। এ নিয়ে গত ২ নভেম্বর সকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে টেনে-হেঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, পাঁচ শিক্ষার্থীর মূল সদনপত্র আগামী তিন বছর আটকে রাখা ও সাত শিক্ষার্থীকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে অন্য ইনস্টিটিউটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তদন্ত কমিটির এই সুপারিশ গত মাসে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পাঠানো হয়।

কারিগরি শিক্ষাবোর্ড গত ১৫ ডিসেম্বর তারিখের সভায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিউটির তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করা হয়। সুপারিশ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন বলে বোর্ডের চেয়ারম্যান মোরাদ হোসেন মোল্লা সিদ্ধান্ত জানান।

যাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে, তারা হলেন- কম্পিউটার বিভাগের অষ্টমপর্বের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন ওরফে সৌরভ, ইলেকট্রো মেডিকেল বিভাগের সপ্তমপর্বের শিক্ষার্থী রায়হানুল ইসলাম, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চমপর্বের মুরাদ হোসেন এবং মেকানিক্যাল বিভাগের তৃতীয়পর্বের শিক্ষার্থী সজিব ইসলাম।

যাদের সনদ আটক রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা হলেন- ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কৌশিক জামান ওরফে বনি, ইলেকট্রো-মেডিকেল বিভাগের সালমান রহমান ওরফে টনি, পাওয়ার বিভাগের সাব্বির আহম্মেদ, মেকাট্রনিক্স বিভাগের হাসিবুল হাসান এবং কম্পিউটার বিভাগের মারুফ হোসেন।

ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার দায়ে পাওয়ার বিভাগের ষষ্ঠপর্বের (অকৃতকার্য) নাঈম ইসলামকে বরিশাল পলিটেকনিক ইনটিটিউটে; ইলেকট্রনিক্স সপ্তমপর্বের প্লাবন কুমার কুণ্ডকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে; মেকাট্রনিক্স বিভাগের সপ্তমপর্বের মেহেদী মাহমুদকে শরিয়তপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে; মেকানিক্যাল বিভাগের সপ্তমপর্বের মেহেদী হাসানকে কাপ্তাই বিএস পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে; ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চমপর্বের ওমর আজিজকে পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে; কম্পিউটার বিভাগের তৃতীয়পর্বের মাহবুবুর রহমানকে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এবং পাওয়ার বিভাগের তৃতীয়পর্বের মাসুদ রানাকে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বদলির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বুধবার বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত তারা হাতে পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও সনদ আটকের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আর যাদের অন্যত্র বদলি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তাদের পরীক্ষা আছে। পরীক্ষার পরে ১ ফেব্রয়ারি থেকে বদলির আদেশ কার্যকর করা হবে।

Tags: