muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান, অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা: সিইসি

cec (3)

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ পৌর নির্বাচনে ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে এই স্থানীয় নির্বাচনের বিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে ব্যর্থতার সমালোচনার মধ্যে ভোটগ্রহণের আগের দিন মঙ্গলবার এই হুঁশিয়ারি দেন নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটির প্রধান।

২৩৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে রাতে শেরে বাংলা নগরে নিজের কার্যালয় ছাড়ার আগে কাজী রকিব সাংবাদিকদের বলেন, “সব নির্বাচনী মালামাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে।

“নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমরা মাঠে রয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। চারদিন তারা মাঠে থাকবেন। এখন সবাই নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে যাবে, নির্ভয়ে ভোট দেবেন।”

বিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে ইসি শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে সমলোচনার মধ্যে কাজী রকিব বলেন, “কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সবাই আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালিয়েছেন।

“উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা শেষ হয়েছে, আরও সুন্দরভাবে সবার অংশগ্রহণে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উপর ছেড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইসির দায় এড়ানোর চেষ্টার প্রতিফলন দেখতে পেয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেকে।

এই সমালোচনার মধ্যে ভোটের আগের দিন কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও মূল দায়িত্ব মাঠ কর্মকর্তাদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন সিইসি।

“নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের ওপর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে আইন মোতাবেক পালন করতে আমি নির্দেশ দিচ্ছি। নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য, অনিয়ম বা পক্ষপাতিত্ব বরদাশত করবে না, এ কথা স্মরণ করে দিচ্ছি।”

“কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার সমর্থকরা ভোট গ্রহণে অনিয়মের চেষ্টা করলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কঠোর ব্যবস্থা নেবেন এবং কমিশনকে জানাবেন,” বলেন তিনি।

অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ইসি ইতোমধ্যে দুজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, অন্তত সাতটি থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান সিইসি। সাতজন সংসদ সদস্যকে সতর্ক করার কথাও বলেন তিনি।

ভোটে দায়িত্বরত নির্বাহী হাকিমরা মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৯১ জনকে ১০ লাখ ২৬ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা এবং চারজনকে কারাদণ্ড দিয়েছে বলেও তুলে ধরা হয় সাংবাদিকদের সামনে।

প্রচারের সময় বিভিন্ন স্থানে সংঘাতের ঘটনাগুলো তুলে ধরে সাংবাদিকরা সিইসির কাছে জানতে চান, ভোটের সময় সহিংসতা হলে কী পদক্ষেপ নেবে ইসি?

“সহিংসতার ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত কয়েকদিন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভোটের দিন আলাদা রেজিস্ট্রার খোলা হবে। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করা হবে,” উত্তর দেন কাজী রকিব।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল থেকে ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এসব বক্তব্য ‘রাজনৈতিক’ বক্তব্য হিসেবেই নিচ্ছে ইসি।

সিইসি বলেন, “রাজনৈতিক দল তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, আপনারাও শুনেছেন। আমরা কিন্তু বিএনপি, আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র হিসেবে বাছ-বিচার করছি না, আমরা করবও না। যেখান অভিযোগ পাচ্ছি ক্রসচেক করছি, খবর নিচ্ছি, তারপর অ্যাকশন নিচ্ছি।”

পৌর নির্বাচনে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন কাজী রকিব।

গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি করা হয়েছে-এ রকম যদি ঘটনা ঘটে কমিশনের ভূমিকা কী হবে- প্রশ্ন রাখা হয় তাকে।

উত্তরে তিনি বলেন, “আমি এখানে আসার আগে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। তাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়ে এসেছি, সাংবাদিকদের কাছে ইসির কার্ড থাকলে ভোটকেন্দ্রে এবং ভোট কক্ষে প্রবেশে বাধা দেবে না।”

সেই সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণে সাংবাদিকদের সহায়তাও চেয়েছেন সিইসি।

“আপনারাও খেয়াল রাখবেন, ভোটকেন্দ্রে কিন্তু বেশি জায়গা নেই, খুব সংকীর্ণ পরিবেশ; সেখানে কেবল নিয়ে ঘোরাঘুরি করলে সমস্যা হয়। সেটা যেন না হয়। আপনার ছবি তুলে এনে সম্প্রচার করেন।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ছিলেন সিইসির সঙ্গে।

Tags: