পাকিস্তান সফর শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় এবার রাষ্ট্রপতির সমপর্যায়ের ‘প্রেসিডেনশিয়াল নিরাপত্তা’ দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে। বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার পর বাংলাদেশ জাতীয় দল বহনকারী বিমান লাহোর বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
আগামী ২৪ তারিখ থেকে মাঠে গড়াবে এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ। অপর দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি। সবগুলো ম্যাচই শুরু হবে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়। যা বাংলাদেশ সময়ে দাঁড়াচ্ছে দুপুর ৩টা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে জানা গেছে যে পাকিস্তান বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জন্য ‘প্রেসিডেনশিয়াল নিরাপত্তা’ ব্যবস্থা নিয়েছে। পাকিস্তানের পুলিশও এই বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে।
পাকিস্তানের পুলিশ জানিয়েছে, তিন স্তর বিশিষ্ট একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা পার হয়েই কেবল স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন একজন দর্শক।
প্রথম দফার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে লাহোরে। লাহোর পুলিশের ডিআইজি রাই বাবর সাঈদ জানান, এ সময় মোট ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। ১৭টি সুপার পুলিশ ডিভিশন এবং ৪৮টি ডেপুটি সুপার পুলিশ ডিভিশন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৩৪ জন ইন্সপেক্টর এবং ৫৯২জন উর্ধ্বতন সাব-অর্ডিনেট অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরকেও একই ধরণের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এছাড়া মাঠের নিরাপত্তার চেয়ে ক্রিকেটারদের চলাচলের পথের নিরাপত্তা একটা বড় ইস্যু পাকিস্তানে।
২০০৯ সালে করাচীতে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের টিম বাসে যে হামলা হয়েছিল, তা ঘটেছিল হোটেল থেকে ক্রিকেটাররা স্টেডিয়াম যাওয়ার পথে। তাই ক্রিকেট দল যেসব পথ দিয়ে যাবে ও আসবে, সেসব জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান লাহোর পুলিশের ডিআইজি।
ভবনের ছাদগুলোতে থাকবে স্নাইপার, আর এছাড়া প্রয়োজন মতো মোতায়েন থাকবে ডলফিন স্কোয়াড (যারা বাইকে টহল দেবেন), এলিট পুলিশ স্কোয়াড এবং পুলিশের রেসপন্স টিম, জানিয়েছেন ডিআইজি।
এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে দেশ থেকে পাঠানো নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলও থাকছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মূলত ডিজিএফআই বা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
মুশফিকসহ চারজনের প্রত্যাখ্যান
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তানে সফর নিশ্চিত হওয়ার পর মুশফিকুর রহিম ঘোষণা করেন যে নিরাপত্তার কথা ভেবে পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তিনি ছাড়া আর কোনো ক্রিকেটার ‘না’ করেননি বটে, কিন্তু কোচিং স্টাফের গুরুত্বপূর্ণ কজন সদস্য যেমন স্পিন বোলিং কোচ ডেনিয়েল ভেট্টোরি, ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি এবং ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক দলের সাথে পাকিস্তান সফরে যাবেন না বলে জানান।
এছাড়া একজন কম্পিউটার বিশ্লেষকও পাকিস্তানে যাবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক।
পরিবারকে বোঝানো বেশ কঠিন ছিল
পাকিস্তান সফরের জন্য বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি জানিয়েছে যে পাকিস্তান সফরের বিষয়টি নিয়ে পরিবারকে বোঝানো বেশ কঠিনই ছিল।
তিনি বলেন, ‘তারা কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। পরে ওরা রাজি হয়েছে। এদিক থেকে কিছুটা স্বস্তি। পরিবার হয়তো অতটা উদ্বিগ্ন থাকবে না। আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।’
সূত্র : বিবিসি বাংলা