দেশের প্রখ্যাত আলেম কিশোরগঞ্জের শহীদী মসজিদের খতিব ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক এবং কওমি মাদরাসা বোর্ডের সহ-সভাপতি আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহের জানাজা ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ জোহর এ জানাজায় বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েক লাখ মুসল্লি ও উলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করেন। আনোয়ার শাহের ছেলে মাওলানা আনোয়ার শাহ তানিম এতে ইমামতি করেন।
জানাজা শেষে তাকে শহরের ঈশা খান রোডে পারিবারিক গোরস্তান বাগে জান্নাতে তাকে দাফন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, কিশোরগঞ্জের পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমসহ শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও ইসলামিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা জানাজায় অংশ নেন।
এ নামাজে হাটহাজারি মাদ্রাসার মহাপরিচালক এবং কওমী মাদ্রাসা বোর্ডের (বেফাক) চেয়ারম্যান আল্লামা আহমেদ শাহ শফী ইমামতি করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শারীরিক কারণে তিনি আসতে পারেননি বলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়।
জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহের নামাজে জানাজা উপলক্ষে সকাল থেকে কিশোরগঞ্জ শহরের দোকানপাটসহ সকল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। জানাজায় অংশ নিতে কাক ডাকা ভোর থেকে শহরের চারপাশের সড়কে মুসল্লীদের স্রোত নামে। সকল সড়কপথ এসে মিশে যায় নরসুন্দা নদী তীরে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।
দুপুর ১২টার মধ্যে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান মুসল্লিদের সমুদ্রে রূপ নেয়। বাদ জোহর নামাজে জানাজা শুরু হলে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান এবং এর আশপাশের এক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা মুসল্লিদের দখলে চলে যায়।
উল্লেখ্য, বুধবার মাগরেবের আযানের আগে রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর শাখা ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ’তে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গত শুক্রবার সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দ্রুত অবস্থার অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আইসিইউ’তে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সাংসদ ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি গভীর শোক প্রকাশ করেন। পৃথক পৃথক শোক বার্তায় তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকার্ত পরিবার স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।