মানব সেবার অঙ্গীকার নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নব- প্রতিষ্টিত বে-সরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল এর শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর নিউ টাউন স্কাইভিউ ভবনে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ জেনারেল হাসপতাল আনুষ্ঠানিক ভাবে ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন করেন ভৈরব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. সায়দুল্লাহ মিয়া।
এ সময় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া।
এ সময় ভৈরব উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আল মামুন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, সহ-সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান বাচ্চু, ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব মো. হুমায়ুন কবির, কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন, সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তোফাজ্জল হক, কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মিছবাহ উদ্দিন আহমেদ, ভৈরব উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জামাল প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, ভৈরব বাজার বন্দরনগরী হলেও ভৈরবপুর এখন হাসপতাল নগরী হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলার চেয়ে ভৈরব উপজেলায় সবচেয়ে বেশী প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এ তিন জেলার মধ্যস্থল হলো ভৈরব। মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সবচেয়ে সহজ ও কাছের জায়গা হলো এ ভৈরব। ভৈরবে চিকিৎসার মান ভাল হওয়ার কারনে প্রতিদিন ভৈরবের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। ভৈরবে একটি ট্রমা হাসপাতাল নির্মাণাধীন এবং ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইতি পূর্বে এত সুন্দর আয়োজনে ভৈরবে কোন প্রাইভেট ক্লিনিক উদ্বোধন হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আজ এ অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্মানিত করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন সবাইকে আহবান জানাচ্ছি এ হাসপাতালে রোগী পাঠানোর জন্য। এ ছাড়া তিনি আরো বলেন ভৈরবের সকল হাসপাতালই আমাদের। আমার বিশ্বাস সকল হাসপাতালেই ভালো চিকিৎসা পাবে। সব জায়গায়ই রোগী মারা যায়। কখনো ডাক্তারগণ রোগী মারেনা। ভালো করার চেষ্টা করে। হাসপাতালে রোগী আসবে, রোগী চিকিৎসা নিয়ে ভালো হবে, আবার মারাও যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে হাসপাতালে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা যাবেনা। ভৈরবে এটা একটা নিয়ম হয়ে গেছে। তাই সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার আহবান জানচ্ছি। আজ এ হাসপাতাল উদ্বোধনে ভৈরবে একটি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নতি হলে হাসপাতালের সুনাম অক্ষুন্ন থাকবে। মানুষকে সেবা দেয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মূল দায়িত্ব। মানুষের সেবা করে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় সে তৃপ্তি অন্য কোন জায়গায় পাওয়া যায় না। কোন রোগী যেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।
নব প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের সার্বিক সহযোগীতা করার আশ্বাস দিয়ে প্রধান আলোচক আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া তার বক্তব্যে ভৈরবকে ৬৫ তম জেলা ঘোষণা করার দাবী জানান।
এ সময় গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ বদিউজ্জামান, পরিচালক সাদেকুর রহমান নবীন, পরিচালক মোঃ আফিল উদ্দিন, পরিচালক নূর মোহাম্মদ রবি, স্কাইভিউ ভবন মালিক আলহাজ্ব মোঃ শফিকুল ইসলাম সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন উপজেলার পল্লীচিকিৎসক এবং ধাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় হাপাতালের পক্ষ থেকে হাপাতালের ওটি ইনচার্জ মোমেনা বেগম সহ স্টাফবৃন্দ অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন এশিয়ান টিভি ও দৈনিক নয়াদিগন্ত ভৈরব প্রতিনিধি আলহাজ্ব সজিব আহমেদ। আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠিত হয়।