muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বোর্ডিং ও জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্র গণ জমায়েত

কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস এবং খেলার মাঠটি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে রোববার (৮ই মার্চ) বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্ররা গণ জমায়েত হয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। পরে বিয়াম স্কুল কর্তৃক অবৈধ দখলের কবল থেকে মুক্ত করার লক্ষে একটি র‍্যালী বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ছাত্র গণজমায়েতের র‍্যালীতে ছাত্ররা ‘মুজিববর্ষ দিচ্ছে ডাক, দখলদার নিপাত যাক’, ‘শিক্ষা আমার অধিকার, দূর হটো দখলদার’, ‘স্কুলের মাঠ ছাত্রাবাস পাশে আছে ছাত্রসমাজ’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন বহন করে। র‍্যালী শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক আনোয়ার কামালের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমন্বয়কারী মাসুদুল হাসান মাসুদ, রেজাউল করিম শিপন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান। কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম আব্দুল্লাহ, বর্তমান ছাত্রদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিহাব ও যুবায়ের।

বক্তারা বলেন, বিয়াম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ক্যাডারদের একটি এসোসিয়েশন আর তাদের লাভজনক সংস্থা হচ্ছে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল। বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের সাথে যুক্ত হয়েছে টার্কিশ হোপ নামের একটি বিতর্কিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে কুখ্যাত জঙ্গি প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে অবস্থানরত ছাত্র এবং শিক্ষকদেরকে জোর পূর্বক উচ্ছেদ করে বিয়াম স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই বিতর্কিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত গোপনে আইনের মারপ্যাচ দেখিয়ে উল্টো মামলা ঠুকে দিয়েছে আমাদের স্কুলের বিরুদ্ধে। বিয়াম পরিচালনা যুক্ত আছেন রাষ্ট্রীয় আমলা আর আমরা সাধারণ জনগণ এই রাষ্ট্রের করদাতা।

১৩৯ বছরের প্রাচীন একটি বিদ্যালয়ের নাম কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের আনাচা কানাচে ছড়িয়ে আছে এ স্কুলের লাখো শিক্ষার্থী। যুগের পর যুগ ১৩টি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ স্কুলে ভর্তি হবার পর ছাত্রাবাসে থেকেই স্কুলে পড়াশুনা করেছে। কিন্তু ২০০৬ সালে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিয়াম কর্তৃপক্ষের নিকট নিয়ম বর্হিভূতভাবে স্কুলের ছাত্রবাসটি ২ বছরের চুক্তিতে ভাড়া দেয়া হয়। পরবর্তীতে ছাত্রবাস সংলগ্ন সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও পুকুরটি অবৈধভাবে দখল করে নেয় বিয়াম কর্তৃপক্ষ। ২০০৬ সালে বিয়াম স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মানবতা বিরোধী অপরাধে দন্ডিত রাজকার মুজাহিদ। সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে এই অবৈধ দখল নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করার জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের ১৫ নভেম্বর মাসিক ১২ হাজার টাকায় বিদ্যালয়ের ছাত্রবাসের দুটি ভবন ২ বছরের জন্য বিয়াম ল্যাবরেটরি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ভাড়া নেয়। ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এসব স্থাপনা এবং সম্পদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়কে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। এদিকে জেলা প্রশাসন খেলার মাঠের আর.এস ও মাঠ সংশোধনী চেয়ে খাস খতিয়ানে অন্তভূক্ত করার জন্য কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিবাদী করে মামলা দায়ের করে। এ পরিস্থিতিতে আবারও আন্দোলনে নামেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ছাত্ররা।

Tags: