ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনিয়র সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে কিশোরগঞ্জ পরিদর্শনে আসেন। তিনি করোনা প্রতিরোধ ও ত্রাণ তৎপরতা বিষয়ক যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরে
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার করোনা প্রতিরোধ ও ত্রাণ তৎপরতায় জড়িত শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, জন-প্রতিনিধি, সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের নেতৃস্থানীয়দের নিয়ে এক মত-বিনিময় সভায় মিলিত হন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।সভায় জেলার ১৩টি উপজেলায় করোনা পরিস্থিতি ও ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী আলোচনা হয়। আলোচনায় প্রধান অতিথি সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, ত্রাণ তৎপরতায় সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃত দুস্থ ও কর্মহীনরা যেন খাদ্য সহায়তা থেকে বাদ না পড়ে তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সততার সাথে করোনার ক্রান্তিকালে আমাদের কাজ করতে হবে। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান,পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), জেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর লে. কর্ণেল মো. মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এম এ আফজল, পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, জেলা বারের সভাপতি পিপি শাহ আজিজুল হক, সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট মিয়া মোহাম্মদ ফেরদৌস, জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল ওয়াহাব বাদল, সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. এ.কে.এম মঞ্জুরুল হক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান খান, পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু, কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাক আহমেদ, কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. মজিবুর রহমান বেলাল প্রমুখ। সভায় বিস্তারিত আলোচনা করার পর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তা আজ থেকে কার্যকরি করার জন্য সভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তের মধ্যে উল্লেযোগ্যগুলো হচ্ছে, ২৩ এপ্রিল থেকে জেলার ১৩টি উপজেলায় কোন লোক মাস্ক পড়া ব্যতিত বের হতে পারবে না। মাস্ক না পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ২০০ টাকা জরিমানা করা হবে। পুলিশ সুপার সেনা কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নির্দেশ দেওয়া হয়। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা কেন করোনায় এ জেলায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ চিকিৎসা কাজে জড়িত লোকজন আক্রান্ত হলে রোগিদের চিকিৎসার কোনো সুযোগ থাকবে না।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রীর আন্তারিকতায় সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম কতটুকু এগিয়েছে-তার বিস্তারিত প্রতিবেদন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অবহিত করতে হবে।
জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মো. আবদুল মান্নান সভা শেষে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করেন। মেডিকেল কলেজের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের বিশাল কক্ষটি পরির্দশন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ঢাকায় ফিরে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিজি হেলথসহ অন্যান্যদের সাথে আলাপ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। যেহেতু রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে জ্ঞাত রয়েছেন।