কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মস্তোফা (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। আক্রান্ত ব্যক্তি ১৪ দিন ধরে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মস্তোফা উপজেলার গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মাতুয়ারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গত ১৫ এপ্রিল তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ১৭ এপ্রিল তার রিপোর্ট অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ পাওয়া যায়। তখন স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবার অনীহা প্রকাশ করায় ওই ব্যক্তির বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর রাখতে ওই ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারীকে দায়িত্ব দেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকেরা গিয়েও তাঁর খোঁজ খবর নিতেন। এই অবস্থায় সকালে তাঁর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে তিনি মারা যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওমর খসরু বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভুগছিলেন। আগের দিন তাঁর শরীর থেকে দ্বিতীয়বারের মতো নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছিল। এই অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সরকারী নিয়ম নীতি অনুসরণ করে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্থানীয় ৪ জন সদস্য দ্বারা মৃত ব্যক্তির কাফন দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এ সময় উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, থানা পুলিশ, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী সাংবাদিকদের জানান, করোনাভাইরাস শনাক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পরই তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে কাফন দাফন সম্পন্ন করি।
তিনি আরো বলেন, আগামী ১৪ দিনের জন্য ঐ বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। লকডাউন অবস্থায় বাড়ির সদস্যদের খাবারের দায়িত্ব স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাস উদ্দিন নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। এর আগে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী ৩ জন মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কাদির জঙ্গল ইউনিয়নের মুসলিম পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া (৪৬), কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার এলাকার নিতাই (৬০) ও হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পানান এলাকার শিশু মিজান (১০)।
এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট আক্রান্ত ১৭৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪ জন ও সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭ জন।