কিশোরগঞ্জে ওষুধ ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন রোগীরা। হঠাৎ করেই খুচরা ওষুধ বিক্রেতারা প্রতিপাতা ওষুধে দাম বাড়িয়েছেন ১০ থেকে ৭০ টাকা। এক্ষেত্রে বিক্রেতা দামে কিছুটা কম রাখলে সমিতির নেতারা তাকে জরিমানা করছেন। মূলত ব্যাঙের ছাতার মতো গজানো বিভিন্ন ফার্মাসির বিক্রি বাড়াতে এ ধরনের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির মুষ্টিমেয় নেতা। এসব অভিযোগ এনেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু ব্যবসায়ী।
সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জে ২ হাজার ৩৭০টি ফার্মাসি রয়েছে। এর মধ্যে ৬০% উপর ফার্মাসিতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পণ্যের গায়ের দামের চেয়ে ছাড় দিয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করার কৌশল নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রতিযোগিতার বাজারে কিশোরগঞ্জের ছোট ছোট নতুন করে গজানো ফার্মাসিগুলোর বিক্রি বাড়াতে অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সিন্ডিকেট চক্র। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় সমিতির মুষ্টিমেয় দায়িত্বশীল নেতার হঠকারিতামূলক এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অনেক ব্যবসায়ীও।
ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ওষুধের দাম বাড়িয়েই চলছে দোকানদাররা। গ্রামের ফার্মেসিগুলোর বিক্রি বাড়াতে এ পথ বেছে নিয়েছে সমিতি। আগে এলআরজির ওষুধ টারব্যাক এক পাতা বিক্রি হতো ৪৫০ টাকায়। অথচ এখন নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। সারজেল বিক্রি হতো ৬৫ টাকায়। কিন্তু নিচ্ছে ৭০ টাকা। ঘরে ঘরে এখন রোগী। বেশিরভাগ পরিবারেই প্রতিদিন ওষুধ কিনতে হয়।
কিন্তু জরিমানা গোনার ভয়ে এখন আর কোনো ফার্মেসি মালিক ওষুধের দাম কম রাখছেন না। ফলে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আবার যাচাই করে ওষুধ কেনার সুযোগও থাকছে না। ওষুধ ব্যবসায় এমন মানবেতর চর্চার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাখেন ক্রেতারা।
কিশোরগঞ্জ ক্যাবের সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু বলেন, ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা লাভ করছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এবং যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি করছে। জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসনকে ঘন ঘন মনিটরিং করতে হবে। অনেক ফার্মেসিগুলোতে রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট নেই। ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফার্মেসিতে ২৫ টাকার ওষুধ ২৫০ টাকাও বিক্রি করে। যার জন্য কিছুদিন আগে জরিমানাও করা হয়েছিল।
জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মোছাম্মৎ ফোয়ারা ইয়াসমিন বলেন, আমরা সভা সেমিনারের মাধ্যমে জনসচেনতা বৃদ্ধি বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছি। কঠোরভাবে সমিতির সবাইকে নির্দেশনা দেয়া আছে যেন ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করে বিক্রি না করে। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করে যাচ্ছি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মোস্তফা বলেন, যদি কোনো ফার্মেসি অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধ বিক্রি করে তবে ভোক্তা অধিকার আইনে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে।