সারাদিনে কাজ শেষে ঘরে ফিরে ঘরের এলোমেলো অবস্থা দেখে স্বস্তির বদলে বাড়তে পারে মানসিক চাপ। তাই ঘরে শান্ত পরিবেশ তৈরি করা দরকার।
ঘরের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর এবং শান্তিপূর্ণ করার কয়েকটি উপায় জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
নিরিবিলি ঘর: বাসার একটি ঘরকে নিরিবিলি স্থানে পরিণত করতে পারেন। বিছানার বালিশগুলো ভিন্নভাবে সাজিয়ে এবং হালকা আলোর বাতি ব্যবহার করা যায়। টেলিভিশন, কম্পিউটার, স্মার্টফোন ইত্যাদি যান্ত্রিক ঝামেলাগুলোকে দূরে রাখতে হবে। সদ্য ফোটা পছন্দের ফুলও রাখা যেতে পারে।। এই ঘর ধ্যানে বসার জন্যও একটি উপযোগী স্থান হতে পারে।
মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি ধ্যান মানুষকে সহানুভূতিশীল করে তোলে।
বাসায় সবুজের সমারোহ: সবুজ গাছপালা দিয়ে বাসা সাজানো রক্তচাপ কমাতে এবং মানসিক চাপজনিত হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। গাছের পাতা বাসায় প্রাকৃতিক আবহ তৈরি করে। পাশাপাশি বাসার ভেতরের বিভিন্ন বায়ুদূষণকারী এবং অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান দূর করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাসার ভেতরে রাখা একটি গাছ প্রায় একশ স্কয়্যারফিট বায়ু বিশুদ্ধ রাখতে পারে। বাসায় ঘৃতকুমারী, পাতাবাহার, লিলি ইত্যাদি গাছ রাখতে পারেন।
সুগন্ধির ব্যবহার: সুবাসিত ঘর বাসিন্দাদের মন প্রফুল্ল রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। লেবুজাতীয় সুগন্ধি খিটখিটে মেজাজ পরিবর্তনে উপকারী। গ্রিন অ্যাপলের মতো মিষ্টি সুবাস কমাতে পারে মাইগ্রেনের ব্যথা। নিজের চারপাশে সুগন্ধি মোমবাতি বা অন্যান্য সুগন্ধি ছড়িয়ে রাখার মধ্যে মিলবে স্বাস্থ্যগুণাবলীও। ঘরে সুবাস ছড়িয়ে দিতে লেবু বা কমলার খোসা, প্রাকৃতিক সুগন্ধিযুক্ত সাবানও ব্যবহার করতে পারেন।
মনের মতো গান: মেজাজটা যেমন রাখতে চান তার সঙ্গে মানানসই গান শুনতে পারেন। নিরিবিলি সময় কাটাতে চাইলে শান্ত সুরের গান শোনা যেতে পারে। গানের তালে তালে নেচে ক্লান্তি দূর করতে চাইলে বেছে নিতে পারেন উঁচু লয়ের গানগুলো।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ক্লাসিকাল মিউজিক’ বা ধ্রুপদী সঙ্গীত হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ কমায়। অপরদিকে উঁচু লয়ের গানগুলো মন ও শরীর চাঙ্গা করে।
প্রবাহমান পানির আবহ: গবেষণা অনুযায়ী, পানির কাছাকাছি থাকা কিংবা প্রবহমান পানির কলকল শব্দ শোনা হৃদস্পন্দন এবং দুশ্চিন্তা কমাতে উপকারী। এটি নির্মল এবং প্রশান্তির অনুভূতি বৃদ্ধি করে। পানির কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব না হলে ঘরের দেয়ালে একটি বহমান নদীর কিংবা বেলাভূমির ছবি ঝুলিয়ে রেখেও ওই প্রশান্তির আবহ পেতে পারেন।
হালকা আলোর বাতি: গবেষণায় বলা হয়, রাতের বেলা উজ্জ্বল আলোর সংস্পর্শে থাকার কারণে চোখ বন্ধ করে রাখলেও মেলাটোনিনের কমে যায় শতকরা ৫০ ভাগ। তাই শোবার ঘর যতটা সম্ভব অন্ধকার রাখা উচিত।
তাই শোবার ঘরে গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করা ভালো। যাতে বাইরের আলো ঘরে ঢুকতে না পারে। এছাড়া শোবার ঘরের বাতিগুলোতে অ্যাম্বার ফিল্টার বা হালকা রংয়ের প্রলেপ পেচিয়ে নিতে পারেন।
পরিপাটি: পরিপাটি ও ছিমছাম রাখতে এবং বড় অনুভব পেতে ঘরে কী রাখবেন আর কী রাখবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। বই, জামা-কাপড়, মেইকআপ কিট, ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি ঘরের সব জিনিসের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচন করা এবং সে অনুযায়ী জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা দরকার।
দেয়ালের রং: শোবার ঘরের দেয়ালে নীল এবং হালকা সবুজ বা হালকা রং ব্যবহার করা ভালো। কারণ এগুলো হল প্রাকৃতিক রং যা বিশ্রামে সহায়ক। এছাড়াও ছোট ছোট বালিশ, ল্যাম্পশেইড ব্যবহার করেও শান্ত আবহ তৈরি করা যায়।