হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে চুল পড়া সমস্যা নেই এমন মানুষ বর্তমানে হয়তো খুজে পাওয়া মুশকিল। বেশির ভাগ মানুষেরই চুল পড়ে কিন্তু সেই চুল পড়ার সাথে যদি যোগ হয় চুল পাকা তাহলে? এই সমস্যা সমাধানে অনেকেই টেনে টেনে চুল উপড়ে ফেলার ঝুঁকি নিতেও রাজি।
কিন্তু চুল উপড়ে ফেললেকি সমস্যার সমাধান হবে? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এমন সম্ভাবনার কথাই বলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চুল তুলে ফেলে বেশি বেশি নতুন চুল গজানোর এক নতুন বিজ্ঞানের সন্ধান পেয়েছেন তারা।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ইঁদুরের শরীরে এই পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন যে, বিশেষ কায়দায় ২০০ চুল তুলে ফেলার পরে ইদুরটির দেহে প্রায় ১ হাজার ৩০০ নতুন চুল গজিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই পদ্ধতিকে ‘সুন্দর বিজ্ঞান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিজ্ঞান সাময়িকী সেল এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
একটা চুল তুলে ফেলার পর চুলের গ্রন্থি কোষগুলো কীভাবে সেটা মেরামত করার জন্য একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে বিষয়টিই মূলত এই গবেষণায় স্থান পেয়েছে। তবে, এই পদ্ধতি মানুষের মাথায় টাকপড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ত্বকে একটা বৃত্তাকার জায়গা বেছে নিয়ে ২০০ চুল কোষ থেকে উপড়ে ফেলেন। এতে দেখা গেছে ৬ মিলিমিটার বৃত্তের ঘনত্বে ২০০ চুল তুলে ফেলায় কোনো নতুন চুলই গজায় না। ৫ মিলিমিটার বৃত্তের ঘনত্বে ২০০ চুল তুলে ফেলায় ১ হাজার ৩০০ নতুন চুল গজিয়েছে। আর ৪ মিলিমিটার বৃত্তের ঘনত্বে ২০০ চুল তুলে ফেলায় ৭৮০ নতুন চুল গজিয়েছে। কিন্তু সব চুল তুলে ফেললে সবগুলো নতুন চুল গজালেও চুলের সংখ্যা কিন্তু বাড়ছে না।
গবেষক দলটির নেতা চেং-মিং চোউং বলেছেন, কোষ থেকে চুল তুলে ফেললে ত্বকের নিচে যে প্রদাহ তৈরি হয় তা অন্য চুল কোষগুলোকে একটা রাসায়নিক সংকেত পাঠায়। এই সংকেত এবং নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা মিলিয়ে নতুন করে চুল গজানোর বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়। কোষ গুলো এমন সংকেত পাঠাতে থাকলে একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে নতুন চুল গজানোর বিষয়টি ঘটে। একে ‘কোরাম সেন্সিং’ বলে অভিহিত করেছেন এই গবেষকেরা।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের রিজেনারেটিভ মেডিসিনের অধ্যাপক ক্রিস ম্যাসন বলেছেন,‘এটা সত্যিই দারুণ সুন্দর বিজ্ঞান। কোরাম সেন্সিংয়ের এই আইডিয়া সত্যিই স্মার্ট।’
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ/ এম ইউ আহমেদ