স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
শুক্রবার দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমান কমিশন প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক বেশকিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কমিশন ২০১৭ সালেই স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছিল। ২০১৯ সালের শুরুতে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির (১১টি) উৎস ও তা নিয়ন্ত্রণে ২৫ দফা সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। ওই প্রতিবেদনটি বাস্তবায়ন করা গেলে হয়তো স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির লাগাম কিছুটা হলেও টেনে ধরা সম্ভব হতো।’
তিনি বলেন, ‘এরপরও কোভিড-১৯ এর চিকিৎসাসামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। কমিশন অভিযোগটি আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে। অনুসন্ধানটি হতে হবে নির্মোহ ও পূর্ণাঙ্গ। মানুষকে সবকিছু জানাতে হবে। দুদক কোনোকিছুই গোপন করে না, করবেও না। বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ও দালিলিক প্রমাণাদির মাধ্যমে যেমন অপরাধীদের আমলে আনতে হবে তেমনি জনগণের কাছেও কমিশনকে জবাবদিহি করতে হবে। জনগণের এই প্রতিষ্ঠানটি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।’
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এ সময় বলেন, ‘অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশেই দুদককে আইনি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাস দুদকের দুজন কর্মকর্তার মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়েছে। এখনও ১৫ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত। আমি তাদের সকলের রোগমুক্তি কামনা করি। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রাণ আত্মসাৎকারীদের আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম। তারপরও কতিপয় লোভী মানুষকে প্রতিরোধ করা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’
দুদক চেয়ারম্যান কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘ত্রাণ আত্মসাতের মামলাগুলোর আর্থিক সংশ্লেষ কম হলেও মামলাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মামলাগুলো নিখুঁতভাবে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই প্রকৃত অপরাধীরা যেন পার না পেয়ে যায়। এছাড়া ঢাকা, সাতক্ষীরা, রংপুর, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাসামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগেও কমিশন থেকে ১১টি মামলা দায়ের করা হয়। এই ১১টি মামলায় সম্পৃক্ত ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট এসব অনুসন্ধান এখনও শেষ হয়নি। হয়তো আরও মামলা হবে, আরও প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হবে। মোদ্দা কথা, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির প্রতি করোনা প্রাদুর্ভাবের আগ থেকেই কমিশন সক্রিয় ছিল। সবমিলিয়ে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কমিশন শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছে।’