বিভিন্ন সরকারি অফিসে বানান ভুলের ছড়াছড়ি। একাধিক সংস্থার বানান ভুলের বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সংস্থাগুলোর সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। বানান ভুলের সমস্যা থেকে যেন মুক্তিই পাচ্ছে না সরকারি অধিদফতরগুলো।
সবশেষ বুধবার (৮ জুলাই) একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিফতরের ১০ লাইনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৭টি বানান ভুল রয়েছে। সরকারি এই সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিটিতে কোন কোন লাইনে একাধিক ভুলও দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের নমুনা সংগ্রহ ও অন্যান্য বিষয়ের অনিয়ম ধরা পড়ার পর বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের বিপক্ষে সংবাদ প্রচারের পরই সেসব প্রতিবেদনের সূত্র উল্লেখ করে অভিযানের পর মঙ্গলবার (৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালের শাখা দুটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। হাসপাতালের শাখা বন্ধের এই তথ্য জানানোর জন্য বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে অধিদপ্তর। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিটিতে অজস্র ভুল রয়ে গেছে।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রথমেই লেখা হয়েছে, ‘রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, উত্তরা এবং রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর ঢাকা (উভয় বেসরকারী হাসপাতাল), মার্চ/ ২০২০ থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছিল।’
প্রথম বাক্যেই বেসরকারি শব্দের ভুল বানানটি লিখেছে অধিদপ্তর। তারা লিখেছে ‘বেসরকারী’।
পুরো বিজ্ঞপ্তিতে যেসব তথ্য লেখা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, ‘কিন্তু গত ০৬-০৭-২০২০ খ্রি. তারিখে র্যাব এর অভিযানে (মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে) রিজেন্ট হাসপাতাল লিঃ, উত্তরা শাখায় (মূল শাখা) বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে, যা বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়া এবং দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।’
অধিপ্তরের বিজ্ঞপ্তির এই অংশে ‘র্যাব এর’ বলা হয়েছে, যেটি ভুল। এটির সঠিক বানান ‘র্যাবের’।
এখানে ‘র্যাব এর’ বলা হয়েছে অথচ এটি হবে ‘র্যাবের’। লিমিটেডের সংক্ষিপ্ত রূপ লেখার ক্ষেত্রেও ভুল রয়েছে অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে লিমিটেডের সংক্ষিপ্ত রুপ লেখা হয়েছে ‘লিঃ’। কিন্তু এটি হবে নয়, বরং ‘লি.’। একই বাক্যে লেখা হয়েছে ইলেকট্রিক। যেটি আসলে হবে ‘ইলেকট্রনিক’।
এছাড়াও বানানে যেমন ভুল রয়েছে, তেমনি বাক্য গঠনেও বেশ ভুল রয়েছে। ‘মোবাইল’ শব্দটি লিখতে গিয়ে সেখানে মাত্রা দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির অন্য এক যায়গায় জায়গায় লেখা হয়েছে ‘প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় উক্ত হাসপাতাল দুটি রোগীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিরাট অংকের টাকা আদায় করছে।’ এখানে আদায় করেছে হবে। কিন্তু লেখা হয়েছে আদায় করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পরের অংশে লেখা হয়েছে-
‘অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও RT-PCR পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে টাকা হাতিয়ে নেয়া, তাগিদ প্রদান করা সত্ত্বেও লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ আরো অনিয়ম করছে বলে প্রমানিত হয়।’
বিজ্ঞপ্তির এই এক বাক্যে তিনটি ভুল রয়েছে। প্রথমে ‘নেওয়া’ নয় বরং ‘নেয়া’ লেখা হয়েছে। এর পরের বাক্যে ভুলটি হচ্ছে ‘আরো’। অথচ শুদ্ধ বানান হচ্ছে ‘আরও’। একই বাক্যের শেষে ‘প্রমানিত’ লেখা হয়েছে। বানানটি হবে ‘প্রমাণিত’।
বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশে লেখা হয়েছে, ‘উল্লেখিত’। কিন্তু এটি আসলে হবে ‘উল্লিখিত’। ইংরেজি বানা ‘Practice’-এর বদলে লেখা হয়েছে ‘Pactice’ এবং ‘Regulation’-এর যায়গায় ‘Regalation’ লেখা হয়েছে যা ভুল।
একেবারে শেষে লেখা হয়েছে ‘মোঃ’ ‘ডাঃ’। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে বিসর্গ নিজেই একটি বর্ণ। সেকারণে ‘মো’. এবং ‘ডা’. লেখা যুক্তিযুক্ত।