কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়া গৃহবধূ স্মৃতি আক্তারকে চিকিৎসা করাতে নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে আটক হয়েছেন গৃহবধুর স্বামী মো. কেরামত আলী নামে এক ব্যাক্তি।
শুক্রবার (১০ জুলাই) বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের হানিয়াবাইদ গ্রামের জগৎ মিয়ার মেয়ে স্মৃতি আক্তারকে ৩-৪ বছর আগে পার্শবর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে কেরামত আলীর সাথে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। কন্যার নাম রাখা হয় আশা। বর্তমানে তার বয়স ১০ মাস। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই স্বামীর বাড়ির লোকজনের সাথে স্মৃতি আক্তারের পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হতো। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার স্মৃতি আক্তারের শাশুড়ির সাথে ঝগড়া হয় তার।
স্মৃতি আক্তারের স্বামী কেরামত আলী সাংবাদিকদের জানান, ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ওড়না দিয়ে ঘরের ভিতরে ফাঁসিতে ঝুলে আছে এ সংবাদ পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসে। পরে স্বামী কেরামত আলী তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করে বলেন, গৃহবধুটি অনেক আগেই মারা গেছে। এ সময় স্বামী কেরামত আলী পালিয়ে যেতে চাইলে এলাকাবাসী তাকে স্ত্রী হত্যার সন্দেহে আটক করে থানায় খবর দেয়। বেলাব থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং স্বামী কেরামত আলীকে আটক করে।
মৃত গৃহবধুর স্বামী কেরামত আলী জানান, আজকে সকালে তিনি বাড়িতে না থাকার সুবাধে তার মায়ের সাথে স্ত্রী স্মৃতির ঝগড়া হয়। তা থেকেই রাগ ও অভিমান করে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।
মৃত গৃহবধু স্মৃতি আক্তারের বাবা জগৎ মিয়া অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, প্রায়ই আমার মেয়েকে তারা নির্যাতন করতো। আজ সকালেও আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে তাকে তারা মেরে ফেলবে। এর কিছুক্ষণ পরই খবর পাই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবরটি সম্পূর্ন সাজানো। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেনা। তাকে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতেছে।
বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার শেখ শাহরিয়ার ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই গৃহবধু মারা গেছে।
বেলাব থানার (ওসি) মো. সেফায়েত হোসেন পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, শশুর বাড়ির লোকজনের গণপিটুনী থেকে বাঁচানোর জন্য নিহত গৃহবধুর স্বামীকে আমরা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। যেহেতু ঘটনাটি কুলিয়ারচর থানার, আমি কুলিয়ারচর থানায় অবগত করেছি। তারাই এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।