মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে সরাসরি বিমান চালুর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বাংলাদেশে কানাডার নবনিযুক্ত হাইকমিশনার বেনোইট পিয়েরে লারামি আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা কানাডার নবনির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানান। নতুন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন পিয়েরে জেমস ট্রুডো’র নেতৃত্বে ঢাকা ও অটোয়ার মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী কানাডায় বসবাস করছে এবং তারা উভয় দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে কানাডা সরকারের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর সরকার উন্নয়নের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তাঁর সরকার বেসরকারি খাত ও স্থানীয় সরকার জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তার রফতানি বৈচিত্র্যায়নে আইটি ও সফটওয়্যারের মতো খাতের জন্য নতুন বাজার খুঁজছে।
পোশাক খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এ শিল্পের নিরাপত্তা দেখাশোনার জন্য পরিদর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির কারণে মানুষের শহরমুখী প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে, শহর ও নগরের জনগণের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস পেয়েছে।
কানাডার সমবায় ব্যবস্থার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশে কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করার চেষ্টা করছে।
কানাডার হাইকমিশনার বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ইস্যুটি উত্থাপন করলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, তাঁর সরকার এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কানাডা সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
বৈঠকে লারামি বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অটোয়া ঢাকার সঙ্গে অংশীদারিত্বকে খুবই মূল্য দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতা ও স্বাস্থ্যের মতো বিভিন্ন খাতে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তিনি আরো বলেন, কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চান।
এ প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে গভীরভাবে আগ্রহী।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
লারামি কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপসমূহেরও প্রশংসা করেন।
বিভিন্ন খাতের বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
কানাডার হাইকমিশনার দু’দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরত্বারোপ করেন।