কতিপয় দরবারি আলেমদের দিয়ে বানানো সরকারি খুৎবা বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন হেফাজতে ইসলাম।
মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার জাহানাবাদী ও মাওলানা তাফাজ্জল হক মুহাদ্দিসে হবিগঞ্জী এ অভিযোগ করেন।
যুক্ত বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, জুমার খুৎবার নিয়ম, পদ্ধতি, বিষয়, ধরন কোনো আলেমের মনগড়া বিষয় নয়। এটি চৌদ্দশ বছর পূর্বে মুহাম্মদ (সা.) এর শেখানো ও নির্দেশিত মূলনীতির আলোকে, কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণ ও খতিবদের বক্তব্য প্রদানের বিষয়ে ইফা ডিজির মতো একজন ব্যক্তি যিনি ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষিত নন। ধর্মতত্ত্ববিদ সাজতে গিয়ে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে নাক গলানোর মতো ধৃষ্টতা দেখানোর কোনো অধিকারই নেই তার। এটি স্পষ্টত, বিশ্বনবী (সা.) এর পূর্ণাঙ্গ আদর্শ ও নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করার শামিল। কুরআন-হাদিসের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ও ইসলামি আইন-কানুন সম্পর্কে বিজ্ঞজনদের মতামত না নিয়ে কতিপয় দরবারি আলেমদের দিয়ে বানানো সরকারি খুৎবা বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে চাপিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছেন ইফা ডিজি।
তারা বলেন, ইফা ডিজিকে মনে রাখতে হবে, হক্কানী আলিম-ওলামা ও পীর মাশায়েখ কারো কর্মচারী নন, তাঁরা মহান আল্লাহ তা’য়ালার গোলাম ও নবী (সা.) এর প্রকৃত উত্তরসূরী বা নায়েবে রাসুল। যারা ইলমে নববীর শিক্ষায় শিক্ষিত, ওহির জ্ঞানে পারদর্শী, মুসলিম উম্মাহর পথপ্রদর্শক তাদেরকে খুৎবা ও বয়ান শেখানোর দায়িত্ব এমন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়, যাদের কাছে ধর্মীয় শিক্ষার লেশমাত্র নেই। এটা মহানবী (সা.) এর আনীত জীবন ব্যবস্থাকে খণ্ডিত, বিকৃত ও নিয়ন্ত্রিত করার নতুন ষড়যন্ত্র। যা সরাসরি ধর্মীয় বিষয়ে অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপের নামান্তর। কেউ জেনে শুনে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করে থাকলে তা ধর্মদ্রোহীতার শামিল।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, যুগযুগ ধরে ওলামা, পীর-মাশায়েখগণ মসজিদে জুমার খুৎবায় এবং ওয়াজ মাহফিলে কুরআন-হাদিসের আলোকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার, সুদ-ঘুষ, ব্যভিচার-অনাচারসহ মানুষকে যাবতীয় সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্তির পথনির্দেশনা দিয়ে আসছেন। এদেশের কোনো আলেম কোনোকালেই রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে উস্কানি দেননি বরং কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে মসজিদকে ব্যবহার করে সামাজিক নৈরাজ্য সৃষ্টির নজির স্থাপন করেছে।