করোনাভাইরাস টেস্টে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর আরেক প্রতারণা বেরিয়ে এসেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি নিজের নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন।
দুটিতে তার স্বামীর নাম দু’রকম। একটি এনআইডির চেয়ে অন্যটিতে বয়স পাঁচ বছর কম দেখানো হয়েছে। এই দুটি পরিচয়পত্রই সক্রিয় রয়েছে বলে দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে এসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় পরিচয়পত্র দুটির বিষয়ে জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) একটি চিঠি দিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক সেলিনা আক্তার মণি।
আজ বুধবার নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি জানানো হয়। আইন অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃত মিথ্যা তথ্য বা ঘোষণা দিয়ে ভোটার হলে ৬ মাস কারাদণ্ড, অনধিক ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে।
সাবরিনার একটি পরিচয়পত্রে সাবরীনা শারমিন হোসেন নাম রয়েছে এবং জন্ম ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। দুটি আইডিতে বয়সের ফারাক পাঁচ বছর। ২০১৬ সালে তিনি দ্বিতীয়বার ভোটার হন। একটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর. এইচ. হক।
আর দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী। একটিতে বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন অপরটিতে মা-বাবার নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মুশাররফ হসেন ও জেসমিন হুসেন দিয়েছেন।
দুই এনআইডিতে দুই ঠিকানাও ব্যবহার করেছেন তিনি। একটিতে মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটির ঠিকানা অন্যটিতে বাড্ডা এলাকার প্রগতি সরণির আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।
একই নাগরিক কিভাবে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র রাখতে পারে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেকেজি কিভাবে করোনা টেস্টের অনুমোদন পেল এই বিষয়ে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে দুদক।
পাশাপাশি জেকেজির করা ১৫ হাজার ভুয়া করোনার টেস্ট রিপোর্ট এর তথ্য পুলিশের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। ডক্টর সাবরিনা জেকেজি হেলথ কেয়ারের আসলেই চেয়ারম্যান কিনা সেটা জানতে নথিপত্র অনুসন্ধান করছে দুদক।
এদিকে, ইসি সচিব মোহাম্মদ আলমগীর জানান, ডা. সাবরিনার দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র কিভাবে সচল আছে তা খতিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, এর আগে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।