রাজবাড়ীতে এক নারী চিকিৎসককে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শারমিন নিগার এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ওই নারী চিকিৎসক (২৪) ঢাকা থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে পৌঁছে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে এসে অভিযুক্তরা ওই নারি চিকিৎসকের কাছে তার গন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তারা বাস পাওয়া যাবে না জানিয়ে ইজিবাইকে ফরিদপুর যাওয়ার কথা বলেন। এক পর্যায়ে ওই নারী চিকিৎসক ইজিবাইকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ান হলে কিছু দূর যাওয়ার পরই ইজিবাইক চালক মো. রানা মোল্লা এবং তার দুই সহযোগী মো. মামুন মোল্লা ও হান্নান সরদার মেয়েটিকে টেনেহিঁচড়ে রাজবাড়ীর বসন্তপুর আখ সেন্টারের পাশে মজলিশপুর নিহাজ জুট মিলের পূর্ব দিকে ব্রিজের পাশে জনৈক জলিল মোল্লার বাশ ঝাড়ে নিয়ে যায়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, রাত ৯টার দিকে তারা তিনজন ওই নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর মোবাইলে আরো কয়েক সহযোগীকে ডেকে আনলে তারাও ধর্ষণ করে। ভোর ৪টার দিকে মেয়েটিকে রাজবাড়ী-ফরিদপুর সড়কে পৌঁছে দিয়ে আসামিরা চলে যায়। পরদিন সকাল ৭টার দিকে নারী চিকিৎসক ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পে সব বিষয় জানান। এ সময় র্যাব মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বসন্তপুর বাজার থেকে রানা মোল্লা এবং তার দুই সহযোগী মামুন মোল্লা ও হান্নান সরদারকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় ওই নারী চিকিৎসক নিজে বাদী রাজবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মো. রানা মোল্লা এবং তার দুই সহযোগী মো. মামুন মোল্লা ও হান্নান সরদারসহ তিনজনকে ফাঁসির ও অতিরিক্ত এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। একই রায়ে আনিসুর রহমান আনিস, করিম মোল্লা, মনির ওরফে কুটি মনিরকে খালাস দেওয়া হয়।
রাজবাড়ীর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. উজির আলী সেখ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে সমাজে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা হ্রাস পাবে।