muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না : নৌ প্রতিমন্ত্রী

পাওয়ার প্ল্যান্ট, ইকোনমিক জোন বা অন্য কোনো উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার ঢাকা-বরিশাল নৌপথের চাঁদপুরের লক্ষ্মীরচর-আলুরবাজার-ঈশানবালা-হিজলা-উলানিয়া-মিয়ারচর নৌপথ পরিদর্শন কালে এ কথা জানান তিনি।

তুরাগ নদীর তীরভূমি দখল করে আরিশা পাওয়ার প্ল্যান্টের স্থাপনা নির্মাণের ওপর হাইকোর্টের নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাওয়ার প্ল্যান্ট, ইকোনমিক জোন বা অন্য কোনো উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না। এখানে আমরা নদীর অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করছি। এ ক্ষেত্রে পাওয়ার প্ল্যান্টের কোনো সম্পর্ক নাই।

তিনি বলেন, ব্যবসায়িক স্থাপনাকে ঘিরে কেউ নদী দখল করতে চাইলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। পাওয়ার প্ল্যান্ট পাওয়ার প্ল্যান্টের জায়গায়, ইকোনমিক জোন ইকোনমিক জোনের জায়গায় আছে। কিন্তু যখন এটা নদীর জায়গায় আসবে তখনই সমস্যা।

এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, হাইকোর্ট এটা নিষ্পত্তি করতে বলেছিল। তার যে আবেদন ছিল, ক্ষতিপূরণ দেয়া, আমরা যেন উচ্ছেদ না করি। আমরাতো এখানে পুরো পাওয়ার প্ল্যান্ট উচ্ছেদ করছি না। আমরা শুধু উনি যতটুকু নদীর জায়গা ভরাট করেছেন তা সরিয়ে নিতে বলেছি। আবার আমরা হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি কোন জায়গাটুকু তাকে সরাতে হবে। এটা আমরা তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি। আরিশা ইকোনমিক জোনের বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) তাদের একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, যতটুকু নদীর জায়গা আছে তা ছেড়ে দিয়ে ইকোনমিক জোন করতে হবে।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত স্রোত ও পলি জমে যাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-কাঠালিয়া রুটে ফেরি আট দিন বন্ধ ছিল। একইভাবে আমাদের বরিশালে রুটের মিয়ার চরের নৌ পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এখন আমাদের ইলিশা দিয়ে ঘুরে যেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আলু বাজার থেকে হিজলা হয়ে নৌপথ হয় কিনা সেটা নিয়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দুটি সভা করেছি। সেখানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাইড্রোগ্রাফার ও প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। 

তিনি বলেন, সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কীভাবে ড্রেজিং করলে নৌ চলাচল করতে পারবে। আজ সরেজমিনে পরিদর্শনে আসলাম। আমরা সর্বশেষ সার্ভে রিপোর্টে আশ্বস্ত হয়েছি, আগে যে সকল ছোট ছোট লিংক নৌপথ আছে সেগুলো সচল করতে পারি।

মিয়ারচর, কালীগঞ্জ ও আলু বাজার এই তিন চ্যানেলের মধ্যে আপনারা কোন রুটটি বাছাই করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা কোন নৌ রুটই বাদ দিচ্ছি না। মিয়ার চরে যে পথটা আছে তা আমরা ড্রেজিং করে চালু করব। পাশাপাশি আলুবাজার চ্যানেলটিও চালু রাখতে চাই। আমরা বরিশালের বহুমাত্রিক পথ রাখতে চাই। কারণ কোন কারণে একটি পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি তাহলে আমরা যেন বিকল্প পথ ব্যবহার করতে পারি।

শিমুলিয়া-কাঠালিয়া ফেরিঘাট সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গতকাল আমরা রো রো ফেরি চালিয়েছিলাম, কিন্তু তা ঠিকমতো চালাতে পারি নাই। সেখানে কে টাইপ ফেরি চলছে। এই পথটা বন্ধ হওয়ার কারণ হচ্ছে পদ্মাসেতুর যে পিলারগুলো, এটি এক বছর আগেও ছিল না। এটা হয়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত পলি জমছে। সেখানে একদিনের মধ্যে আমাদের নৌপথ বন্ধ হয়েছে। এটা যেহেতু পদ্মা সেতুর কাছাকাছি তাই বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে ড্রেজিং করার সুযোগ নাই। এটা পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ চীনো হাইড্রোকে দায়িত্ব দিয়েছে, তারা করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এখন পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং বসিয়েছে এবং ড্রেজিং করছে। আমাদের ১০টি ড্রেজার কাজ করছে, আজকেও একটি ড্রেজার যুক্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন নৌপথ তৈরি করছিলাম, তখন শিমুলিয়ায় আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এটাও আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কাজেই এখানে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে বিআইডব্লিউটিসির কোন সমন্বয়হীনতা নেই। যখনই পথ তৈরি হবে তখনই ফেরি চালু হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে আমাদের নৌ পথের থেকেও প্রথম গুরুত্ব দিতে হবে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর বিষয়ে। সেতুর কার্যক্রম বিঘ্নিত করে, পদ্মাসেতুকে ঝুঁকিতে ফেলে আমরা কোন পথ তৈরি করতে চাই না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) মো. দেলোয়ার হোসেন, পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন, পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

Tags: