বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় ১৪ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের জেল দেওয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন তিনজনকে।
এদের মধ্যে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং একজনকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এই মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় দেওয়া হয়। তাতে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত।চারজনকে দেওয়া হয় খালাস।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে শিশু আদালতে নিয়ে আসা হয়; বাকি আটজনকে পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে আদালতে হাজির করা হয়।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। ৬৩ কার্যদিবস শেষে ৭৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর বরগুনা শিশু আদালত এ মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়। মামলা ১৪ আসামির মধ্যে ৭ আসামির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে কিশোর গ্যাং বন্ড বাহিনী কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। ওই হত্যাকাণ্ড সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
কিশোর গ্যাং বন্ড বাহিনী প্রকাশ্যে রিফাতকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেলেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
ঘটনার পরদিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা মো. আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ একে একে গ্রেপ্তার করেন এজাহারভুক্ত আসামিদের।
রিফাতের ওপর হামলার ছয় দিন পর ২ জুলাই ভোর রাতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন এ মামলার আলোচিত প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের দুই মাস ছয় দিন পর গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেন পুলিশ।
এদের মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামি এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।