প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য কমে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য দিদারুল আলমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার কৃষি জমি সংরক্ষণ ও পরিকল্পিত গ্রামীণ উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছে। কৃষি জমির যাতে অপচয় না হয়, এদিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া আবাসিক সমস্যা সমাধানে ফ্ল্যাট বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে গ্রামীন অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চালনের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মডেল ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সরকারের অগ্রাধিকারমূলক এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ৪৮৫টি উপজেলার ৪৫ হাজার ৩টি ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে ৪০ হাজার ৫২৭টি গ্রামের প্রায় ২২ লাখ দরিদ্র পরিবার তথা ১ কোটিরও উপর দরিদ্র জনগোষ্ঠী উপকৃত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সব দরিদ্র উপকারভোগীদের বর্তমান মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। উপকারভোগীদের নিজস্ব সঞ্চয় ৮৮৬ কোটি টাকা, সরকারি অনুদান ১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা এবং এর সাথে ব্যাংক সুদ ও সার্ভিস চার্জ যুক্ত হয়ে মোট মূলধন ২ হাজার ৬৬১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঞ্চিত অর্থ দরিদ্র জনগণের সমিতির ব্যাংক হিসেবে গচ্ছিত রয়েছে। যার মধ্য থেকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সদস্যরা সমিতির তহবিল থেকে প্রায় ২ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ২০ লাখ ৭৬ হাজার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়বর্ধক খামার গড়ে তুলেছেন। এ বিনিয়োগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে এক বৈপ্লবিক ধারার সূচনা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পভুক্ত প্রতিটি পরিবারের বাৎসরিক গড় আয় বেড়েছে ১০ হাজার ৯২১ টাকা। প্রকল্প এলাকায় নিম্ন আয়ের পরিবারের সংখ্যা শতকরা ১৫ ভাগ থেকে কমে বর্তমানে শতকরা ৩ ভাগে দাঁড়িয়েছে।