মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে ফেরত আসা ২১৯ জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টকে এই বিষয়ে অবহিত করেছে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম কোর্ট)। এখন থেকে তাদের আর এই মামলায় হাজিরা দিতে হবে না বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ফুয়াদ হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ভিয়েতনাম-কাতার ফেরত ৮৩ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় চলমান তদন্ত কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। আজ সেটি আবার শুনানির জন্য ছিল।
ভিয়েতনাম ফেরত রহমান নামের এক প্রবাসীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) হাইকোর্টের বেঞ্চ এমন আদেশ দেন। গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিদেশফেরত ৮৩ বাংলাদেশিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে তুরাগ থানায় নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮১ জন ভিয়েতনাম এবং দুইজন কাতার ফেরত।
গত ২২ অক্টোবর ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, পরবর্তীতে তাদের জামিন দেয়া হয়। এর মধ্যে ভিয়েতনাম ফেরত রহমান নামের একজন ৫৪ ধারার তদন্ত কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। পরে হাইকোর্ট বিভাগ ওই তদন্ত কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি কার্যক্রম বাতিলে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ২১৯ প্রবাসী দেশে ফেরত আসার পর তাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। তারা সেসব দেশে বিভিন্ন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দেশে আসার পর তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হলে তুরাগ থানায় জিডি করে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার শলা-পরামর্শ করছিলেন। ৪ জুলাই তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে বাহারাইন থেকে আসা চাঁদপুরের শাহিন আলমও রয়েছেন। অবশ্য ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি জামিন পান। এরপর তার বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় চলমান কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
গত ৮ অক্টোবর হাইকোর্ট শাহিনের তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন। পাশাপাশি ঢাকার সিএমএম-এর কাছেও ব্যাখ্যা চান উচ্চ আদালত। এর পর আজ (৫ নভেম্বর) এ মামলার শুনানি হয়।