কলেজে ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে বিরোধের জেরে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র আয়াজ হককে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামি ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসানকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দিয়েছেন আদালত। আসামিরা সবাই ঢাকা সিটি কলেজের ছাত্র।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যান।
এর আগে কারাগারে আটক আসামি ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসান ও তৌহিদুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালত তাদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামিদের সাজা পরোয়ানা করে পাঠানো হয়। তবে এ মামলায় মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যান পলাতক থাকায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘২০১৪ সালের ৯ জুন ঢাকা সিটি কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও খরচ বাবদ টাকা তোলার বিষয় নিয়ে আয়াজের বড় ভাই সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশদিন হকের সাথে আসামিদের কথা-কাটাকাটিসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ওইদিন বিকেলে ধানমন্ডি থানার জিগাতলায় যাত্রী ছাউনির নিকটে আয়াজকে একা পেয়ে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে এলোপাতাড়ি মারপিট করে মারাত্মক জখম করে। তারপর আয়াজকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
ছেলে আয়াজ হত্যার ঘটনায় বাবা আইনজীবী শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৯ জুন ধানমন্ডি থানায় সিটি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছয় ছাত্র ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসান, তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যানের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এরপর ২০১৫ সালের ১৩ মে ধানমন্ডি থানার এসআই সাহিদুল বিশ্বাস ৪৭ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। পরে ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। বিচার চলাকালে বিভিন্ন সময়ে আদালত ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।