দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এস কে সিনহা) ১১ জনের বিরুদ্ধে সিনহার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিংহ ও ভাতিজা শঙ্খজিত সিনহার সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, কারাগারে থাকা আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আসামি বাবুল চিশতী হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় সাক্ষী শঙ্খজিত সিনহার আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এদিন তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় বিচারক ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্ষ করেন।
এ নিয়ে মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। এর আগে গত ১৩ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলায় এখনো যারা পলাতক রয়েছেন তারা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা,ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী।
এ মামলার এসকে সিনহা ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ তদন্তকালে মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
গত ৫ জানুয়ারি ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে দেয়া চার্জশিট গ্রহণ করে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের হাজির হতে নির্দেশনা দেন।
এর আগে গত ২০১৯ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ এ চার্জশিট দেন।
গত বছরের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১-এ এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে চার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ তৈরি করে তা একই দিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে আসামি এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে এসকে সিনহা নগদ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।