মানিকগঞ্জে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আশরাফ আলী হত্যা মামলায় নারীসহ পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহানা হক সিদ্দীকা মঙ্গলবার আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মঞ্জুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন, বাবুল মিয়া, আজিজুল হক ও ফেলি বেগম। এদিকে কুড়িগ্রামে স্ত্রী শাহিনা বেগম হত্যা মামলায় স্বামী বকুলকে মৃত্যুদণ্ড এবং নোয়াখালীতে স্বামী শহিদ উল্যা হত্যা মামলায় তার স্ত্রী কুলসুমকে মৃত্যুদণ্ড এবং কুলসুমের পিতা-মাতাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া বরিশালে ৫ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মানিকগঞ্জ : ২০১৩ সালের ১৮ জুন ঘিওর উপজেলার ফুলহারা গ্রামে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আশরাফ আলীকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ১৯ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান আশরাফ আলী। আদালতে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে খালাস দেন।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুরে শাহিনা বেগমকে হত্যা মামলায় মঙ্গলবার স্বামী বকুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুল মান্নান। কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কারখানা পাড়ার শামসুল হকের মেয়ে শাহিনা বেগমকে কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলার চর সাজাই নয়াপাড়ার আজিজুল হকের ছেলে বকুল ২০০৫ বিয়ে করেন। ২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর সকালে শাহিনাকে তার স্বামীর ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় শাহিনাকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
বরিশাল : ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ইদ্রিস হাওলাদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। সোমবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি ইদ্রিস মুলাদী উপজেলার ডিক্রীরচরের কছিম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই মুলাদী থানায় মামলা করা হয়।
নোয়াখালী : বেগমগঞ্জের নরোত্তমপুর ইউনিয়নের মধ্যম নরোত্তমপুর গ্রামে জমি রেজিস্ট্রি করে না দেওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ির প্ররোচনায় স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড ও তার পিতামাতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নোয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ।
মঙ্গলবার বিকালে এ রায় ঘোষণা করেন। দাম্পত্য জীবন শুরুর এক পর্যায়ে স্ত্রী বিবি কুলসুম স্বামীর সম্পদ লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে রাজি না হওয়ায় বিবি কুলসুম ঠান্ডা মাথায় ২০১৮ সালের মে মাসে স্বামীর গায়ে গরম তেল ঢেলে দেয়। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিবি কুলসুম ও তার মাতা লিপি আক্তার পলাতক রয়েছে।