muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

ইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতিকে ফের চিঠি

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবারো রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। এর আগে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বরও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেয়া হয়েছিলো।

ইসির সাবেক আইনজীবী শাহদীন মালিক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ৪২ জন নাগরিকের পক্ষ থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও অন্যান্য গুরুতর অসদাচরণের অভিযােগের তদন্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল গঠন করার আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, পরবর্তীতে ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে উপরোক্ত আবেদনের সংযুক্তি হিসেবে আরেকটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। চিঠির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ সম্পর্কিত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযােগ নিয়ে বৈশাখী টেলিভিশনের সাত পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদনের কপি সংযােজন করা হয়। একই বিষয়ে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) দপ্তর কর্তৃক উত্থাপিত অডিট আপত্তি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনের কপিও সংযোজন করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আমাদের (৪২ নাগরিক) অভিযোগের বিষয়ে সামনাসামনিভাবে অবগত করার জন্য আপনার (রাষ্ট্রপতির) সুবিধামতো সময়ে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছি।’

দ্বিতীয় চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘ নয় মাসের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের অধীনস্থ ইলেক্টোরাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ভয়াবহ দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়ম সম্পর্কে ২০১৯ সালে বৈশাখী টেলিভিশনে সাত পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রতিবেদনে বিশেষ বক্তা, কোর্স উপদেষ্টা, কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়ক, সহকারী সমন্বয়কসহ ‘বিতর্কিত’ ১৫টি পদ সৃষ্টির মাধ্যমে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্য চারজন কমিশনার, সচিব, ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকসহ কিছু উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে অন্যায় ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ উত্থাপিত হয়। প্রতিবেদনে ২০১৮-১৯ সালে অল্প কিছু কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ বাজেট থেকে ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

প্রতিবেদনে আরো অভিযোগ করা হয়, এর মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য চার কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধানসহ মাত্র ১৮ জন কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে প্রকাশিত বক্তব্যে কমিশনের বর্তমান সচিবও এমন অর্থ ভাগাভাগি করে নেয়ার নীতিগত দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে পাঠানো চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে এটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। কমিশনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এটিকে স্বেচ্ছাচারিতামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে নয় কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের ট্যাক্সের টাকা অভিনব কৌশলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেয়ার জন্য নয়; বরং নিরপেক্ষভাবে জনকল্যাণে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার জন্য। কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা প্রশিক্ষণের নামে ভাগাভাগি করে নেয়া দুর্নীতিমূলক চরম গর্হিত কাজ, যা সম্পর্কে অডিট আপত্তি উঠেছে বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর একই কাজের জন্য দুবার সুযোগ-সুবিধা নেয়া আইনের ভাষায় ‘ডাবল ডিপিং’, যা অন্যায়, অনৈতিক ও গুরুতর অর্থসংশ্লিষ্ট অসদাচরণ।

কেবল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যথাযথ তদন্তে ৪২ নাগরিকের অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হতে পারে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।

Tags: