মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডোটকমঃ
পূর্ব সুন্দরবনে কটকা অভয়ারণ্যে ফ্রান্সের তিন সাংবাদিকের ক্যামেরাযুক্ত একটি ড্রোন জব্দ করেছে বন বিভাগ।
কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও ড্রোন ফেরত বা মামলা দায়ের করেনি বনবিভাগ। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই সাংবাদিকরা।
সপ্তাহ খানেক আগে সুন্দরবনে ড্রোনের সাহায্যে ছবি তোলার সময় বন বিভাগ ওই তিন সাংবাদিককের ড্রোনটি জব্দ করে। সুন্দরবন বিভাগের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে অভয়ারণ্যে ড্রোন ওড়ানোর কারণে তা জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, পাগমা টুর এন্ড ট্রাভেল্স কোম্পানি এমএল বাওয়ালী লঞ্চে করে অন্যান্যদের সাথে ফ্রান্সের ‘এআরটিই’ টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক গাই কিউসি, টিমো এভাম্যান ও নাসিম এলমাউন সুন্দরবন ভ্রমনে আসেন।
৩১ জানুয়ারী সকাল ১১টার দিকে এই তিন সাংবাদিক কটকার টাওয়ারের খালের পূর্ব পাশের চরের বনের আকাশে ক্যামেরা সমৃদ্ধ একটি ড্রোন উড়িয়ে বন্য প্রানীসহ জীব বৈচিত্র্যের ছবি ধারন করতে থাকেন। বিষয়টি প্রথমে জেলে-বনজীবীদের নজরে এলে কটকা অভয়ারণ্যে সোরগোল পড়ে যায়। পরে কটকা অভয়ারণ্যে কর্মকর্তা ফরেষ্ট রেঞ্জের শাহ নোমান তিন সাংবাদিককে উড়ানো ঐ ড্রোনটি নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্য করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ঐ তিন সাংবাদিক সুন্দরবন নিয়ে তাদের দেশের টেলিভিশনের জন্য ডকুমেন্টারি করার কথা জানালে ড্রোনটি রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফ্লাইং ক্যামেরাসহ আটক ওই ড্রোনটি হচ্ছে ডিজেআই কোম্পানির। যার মডেল নং- পি-৩৩০জেড, সিরিয়াল নাম্বার পিএলএল-৬৩৬১৫৪১২৬। একটি ব্যাটারিসহ ড্রোনটির সাথে একটি রিমোটও রয়েছে। এই ড্রোনটি বাংলাদেশে আনার জন্য কাস্টম্স ক্লিয়ারেন্স ও বাংলাদেশে আকাশে ওড়াবার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতিও দেখাতে পারেননি ওই তিন সাংবাদিক।
পরে ওই ড্রোনটি বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের অফিসে এনে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। জানানো হয় হয় বন মন্ত্রনালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের। গত এক সপ্তাহ ধরে এই ড্রোনেরর বিষয়ে কোন সমাধানে পৌছাতে পারেনি সুন্দরবন বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ( এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ কটকা অভয়ারণ্য থেকে ড্রোন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এখন এই ড্রোনের বিষয়ে কি করা হবে তা জানতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে পাগমা টুর এন্ড ট্রাভেল্স কোম্পানির মালিক নজরুল ইসলাম দাবি করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ‘এআরটিই’ টেলিভিশনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সুন্দরবন নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করতে ‘জেড’ প্রোডাকশন কোম্পানি তিন সাংবাদিককে বাংলাদেশে পাঠায়। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নিয়ে আমাদের মাধ্যমে সুন্দরবন ভ্রমনে যায়।
সুন্দরবনে ড্রোন ওড়াতে বন বিভাগের অনুমতির বিষয়টি ওই তিন সাংবাদিকের জানা না থাকার কারনে তারা বিড়ম্বনায় পড়েছে। তারা বিষয়টি না জানার কারণ উল্লেখসহ ভুল স্বীকার করে সুন্দরবন বিভাগের কাছে ড্রোনটি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছে।
সোমবার পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোন সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য ওই তিন সাংবাদিক ঢাকাস্থ ফ্রান্স দুতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।