মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকমঃ
রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে সংসদ সদস্যরা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সন্ত্রাসী-জঙ্গি অপশক্তিকে দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। কোন ভাবেই ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবে না। জনগণই তাদেরকে প্রতিহত করবে। মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষকারীদের প্রতিহত করতে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ বুধবার রাতে সাধারণ আলোচনাকালে সভাপতিত্ব করেন প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। আলোচনায় অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, এইচ এন আশিকুর রহমান, নজরুল ইসলাম বাবু, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, সাবিনা আক্তার তুহীন ও শিরীন নাঈম এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বিএনপি মানে পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদী দল। দেশের জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, উন্নয়ন ও প্রগতিকে বেছে নিয়েছে। জঙ্গি-সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ও অন্ধকারের শক্তি আর ফিরে আসবে না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকলেও খালেদা জিয়া কখনো রাজাকারকে রাজাকার বলেননি। আজ তিনি শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, তাই তাঁকে সুস্থ্য রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। অগ্নি সন্ত্রাস করে খালেদা জিয়া নিজের হাত পুড়িয়েছেন, এবার শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে বিদ্রোহের আগুণ জ্বালিয়েছেন তাতে তিনি ও তাঁর দল জ্বলে-পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবেন। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান তিনি।
জাপা নেতা পীর ফজলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। দেশ তথ্য-প্রযুক্তি দ্রুততার সঙ্গে এগিয়েছে। গ্রামের কৃষকরাও আজ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষির উন্নয়ন ঘটনাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তার স্বীকৃত্তি দিচ্ছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের থেকেও নিরাপদ বাংলাদেশ। সাহায্য নির্ভর বাংলাদেশ বাণিজ্য নির্ভর হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কর্তৃক চা দোকানি হত্যা, ব্যাংক লুটপাট ও শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা আমাদের অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। তাই সকল অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সমালোচনা করে তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানান।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খালেদা জিয়া কটাক্ষ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিজে ক্ষমতায় থাকাকালে ৩০ লক্ষ শহীদের কথা বলেছেন। অথচ এখন সেই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে ব্যর্থ হয়ে তিনি বেসামাল কথা বলছেন। পাগলে কিনা বলে-ছাগলে কিনা খায়। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর ক্যাম্পে বিলাসবহুল জীবন যাপান করেছেন। তার মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানার কথা নয়। যুদ্ধের সময় আরাম-আয়েশে থাকা কোন ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই বলে দাবি করেন তিনি।
সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ বলেন, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বিএনপির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। খালেদা জিয়া জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে আজ সংসদে অংশগ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু তারা জোর করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। জ্বালাও-পোড়াও, পেট্টলবোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেননি। বিএনপি নেত্রী বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলেন, এটা ভূতের মুখে রাম নামের সামিল। তারা পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে বর্তমান সরকার বৈধ।
এইচ এন আশিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করেন না বলেই বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিএনপির আমলে সরকার ছিল চাকরি ছিল না, খাম্বা ছিল বিদ্যুত ছিল না, হাসপাতাল ছিল ওষুধ ছিল না, মানুষের নিরাপত্তা ছিল না। এখন বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞানকে তৃণমূলে নিয়ে গেছেন।
নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, যারা পেছন থেকে ছুরি মেরে দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, সেই খালেদা জিয়ারা আজ জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছেন। আর মাত্র ৫টি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/১০-০২-২০১৬ইং/ অর্থ