করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না ঈদের জামাত। প্রায় পৌনে তিন’শ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মতো ঈদের দিনেও নির্জনতা দেখা যাবে উপ-মহাদেশের বৃহত্তম আর দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদগাহ ময়দানে।
গতকাল রোববার (০৯ মে) বিকেলে ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, করোনা মহামারির কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছরের মতো এবারও ঈদগাহ কিংবা খোলা মাঠে ঈদের জামাত পড়া যাবে না। তাই সরকারি নির্দেশ পেয়ে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি সভা করে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শোলাকিয়া ঈদগাহে এবার ১৯৪ তম ঈদুল ফিতরের বড় জামাত অনুষ্ঠানের কথা ছিল। ঈদের সময় লাখো মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে শোলাকিয়া। ঈদের দিন ভোর থেকে বিশালায়তনের এ ঈদগাহ ঘিরে চোখে পড়ে প্রশাসনের প্রস্তুতি যজ্ঞ। ঈদের আগের দিন থেকে দেশে-বিদেশের মুসল্লিদের মাঠে অবস্থান ও রাত্রিযাপন থাকে সাধারণ দৃশ্য। তবে এবারের ঈদে আবারও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে শোলাকিয়া।
মহামারি করোনা বদলে দিয়েছে ২৭০ বছরের ইতিহাস। যুগের পর যুগ নানা দুর্যোগ-দুর্বিপাক কেটেছে। তবে বন্ধ হয়নি শোলাকিয়া মাঠের ঈদের জামাত। এমনকি ইতিহাসের বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার সময়েও হয়েছে ঈদের জামাত।
একদিকে পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের বন্দুকযুদ্ধ চলছে, অন্যদিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের নামাজ। তবে এসব এখন ইতিহাস। বাস্তবতা হচ্ছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারির জন্য গত বছর শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত হয়নি। হচ্ছে না এবারও।
১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহ মাঠের গোড়াপত্তন হয়। ওই বছর ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেই ঈদের জামাতে মুসল্লির সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকেই উচ্চারণ বিবর্তনে বর্তমানে ‘শোলাকিয়া’ নামকরণ হয়েছে।