রাজধানী কায়রোর নীল নদের তীরে হাজারো বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যে বুকে ধারণ করে দাঁড়িয়ে থাকা জগতবিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় আল-আযহার। সেই বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি সহ মিসরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আসা প্রায় চার শতাধিক ছাত্র / ছাত্রীদের নিয়ে গত শনিবার বাংলাদেশ ছাত্র সংগঠন “ইত্তেহাদ” উদযাপন করল বাৎসরিক ইফতার ও কুইজ প্রতিযোগিতা।
করোনার সকল বিধি-নিষেধ মেনে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণে ইফতার মাহফিল প্রধান অতিথি ছিলেন মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। ইসলামী কায়রোর ফেরদাউস প্রাসাদ হলে বিকেল ৫:০০ ঘটিকায় সাইমুম মাহদীর উপস্থাপনায় শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যম আগত অতিথিদের স্বাগত জানান ইত্তেহাদ-এর সভাপতি শরিফ উদ্দিন আব্দুল মান্নান। আল- আযহার বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দেন মিসরে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত প্রবাসী- বাংলাদেশী সহ প্রায় ৪শতাধিক অতিথি।
আগত অতিথিদের মধ্য থেকে রাষ্টদূত মনিরুল ইসলাম সহ বেশ কজন অতিথি বক্তব্য রাখেন। সভাপতি শরিফ উদ্দিন আব্দুল মান্নান এর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্টদূত বলেন, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত বাংলাদেশী ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যা এবং বাংলাদেশ থেকে আরও শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়ার জন্য ঐতিহাসিক আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও মিসরের প্রধান ইমাম শায়খুল আযহার ডঃ আহমেদ আত-তয়্যিব’কে অনুরোধ করেছি।
শায়খুল আযহার বাঙ্গালী জাতির প্রতি আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্হান স্পষ্ট করে বলেছেন, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় বাঙ্গালী জাতিকে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে মূল্যায়ন করে। আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশী ছাত্রদের মেধা, মনন বিকাশ ও সামগ্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ইসলামের সঠিক দাওয়াত প্রচারের জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার মাধ্যমে স্বদেশে ফিরে গিয়ে ইসলামের মধ্যমপন্থি চিন্তাকে প্রচার ও প্রসার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ও বাংলাদেশী ছাত্রদের সমস্যা এবং বৃত্তি বৃদ্ধির বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। তিনি আরো বললেন, আযহার ইসলামের উদার আদর্শকে প্রচার করে, ভ্রান্ত চিন্তা-দর্শনকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে, সমস্ত ধর্মে স্বীকৃত শান্তির বাণী প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে।
শায়খুল আযহার বাংলাদেশীদের জন্য প্রক্রিয়াধীন আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশী ইমামদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে, যেন তারা সমসাময়িক বিষয়ের সমাধান ও যুগোপযোগী সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করতে পারে।
রাষ্টদূত আরো বলেন, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশী ছাত্রদের আবাসিক সমস্যার কথা তিনি অবগত আছেন, এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আবাসিক হল তৈরি করে আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী ছাত্রদের আবাসন সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ও মা’হাদে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্রদের বৃত্তির সংখ্যা আরো বৃদ্ধির কথা ব্যক্ত করেন।
সর্ব শেষে একটি মনোজ্ঞ কুইজ প্রতিযোগিতা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া করা হয়।