৩৪টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ ১০৫টি দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। ছয় দিনের সম্মেলনের তিনদিন বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার হচ্ছে শীর্ষ সম্মেলন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় দুই ঘণ্টার প্লেনারি সেশন-৪ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মিশরের প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মেহলাব এই সেশনে যৌথভাবে সহ-সভাপতিত্ব করেন। নাইজেরিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইনস, লিবিয়া, পাকিস্তান, কম্বোডিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা এই সেশনে বক্তব্য দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে হোটেল ‘বোরোবুদুর জাকার্তা’ থেকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বালাই সিদাং জাকার্তা সম্মেলন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
প্লেনারি সেশন শেষের পর ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামিদাল্লাহর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
এশিয়ান-আফ্রিকান সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার জাকার্তায় পৌঁছানোর পর বুধবার ব্যস্ত সময় কাটান শেখ হাসিনা।
সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে সন্ত্রাস দমন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্ব নেতাদের সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
ক্ষুধা ও অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রপন্থা দমন এবং টেকসই উন্নয়ন- এই তিনটি বিষয় সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক বলে মত দেন তিনি।
এসব লক্ষ্য পূরণে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে আফ্রো-এশীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার সম্মেলনের ফাঁকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন এবং কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আবদুল্লাহ জেড আল-মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন শেখ হাসিনা।
এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লংয়ের সঙ্গেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নেন।
রাতে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।
এশিয়ান-আফ্রিকান সম্মেলনের প্রথম সমাবেশ ১৯৫৫ সালে ইন্দোনেশিয়াতেই হয়েছিল ‘বান্দুং সম্মেলন’ নামে। যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি সুকর্নর উদ্যোগে সেই সম্মেলনের প্রভাবে দুই বৃহৎ বিশ্ব জোটের বাইরে পরবর্তীতে সৃষ্টি হয়েছিল জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম)।
৬০ বছর পূর্তিতে ইন্দোনেশিয়াই এবারের সম্মেলনের আয়োজক দেশ হিসেবে রয়েছে।
সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, সচিব মো. শহীদুল হকসহ উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ ৫১ জন জাকার্তায় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ/ এম ইউ