মোঃ সোহেল রানা, স্টাফ রিপোর্টারঃ
সারাবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখনো খোঁজ নেয় ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময় কারফিউ ভেঙ্গে মিছিলে যোগ দেওয়ায় পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শাহাদাৎ বরন কারী প্রথম শহীদ রফিকের বসতভিটার। খোঁজ নেয় তার পরিবার আর পরিজনরা কেমন, কি অবস্থায় আছেন?
আর ফেব্রুয়ারি মাস এলে শুধু রফিকের বাড়িতেই নয়, সারাগ্রামে এক ধরনের আনন্দ আর গর্বের আবহ থাকে। তাই এখন ফেব্রুয়ারি মাস মানেই অন্যরকম এক মাস রফিকের পরিবারের কাছে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমন কথাই জানান রফিকের ভাবি গুলেনুর বেগম।
রফিকের পৈত্রিক ভিটায় বসবাসকারী গুলেনুর বেগম বলেন, ভাষা আন্দোলনের কয়েক যুগ পরেও সারাবিশ্বের মানুষ গভীর শ্রদ্ধায় রফিককে স্মরণ করেন।
তিনি জানান, এরইমধ্যে তাদের গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ‘রফিকনগর’ রাখা হয়েছে। গ্রামে নির্মিত হয়েছে ‘ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি যাদুঘর’।
এছাড়াও রফিকের বসতভিটায় নির্মিত হয়েছে একটি শহীদ মিনার। এসব প্রাপ্তি অনেক বড় বলে মন্তব্য করেন রফিকের ভাবি।
তিনি জানান, বর্তমানে এই ভিটায় তিনি দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা ঢাকায় বসবাস করেন।
ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি যাদুঘর ঘুরে দেখা যায় বইয়ের ব্যাপক সমাহার।
গ্রন্থাগারিক ফরহাদ হোসেন খান বলেন, এখানে দেশি-বিদেশি লেখকের বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে ১৬ হাজার বই রয়েছে। প্রতিদিনই দেশ-বিদেশের নানা বয়সের মানুষ গ্রন্থাগারে আসেন। গ্রামের স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে এসে বই ও পত্রিকা পড়েন।
১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধরা ইউনিয়নের তৎকালীন পারিল গ্রামে আবদুল লতিফ ও রাফিজা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন মহান ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ।
গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ভর্তি হন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে। দেশ বিভাগের পরে সেখান থেকে ফিরে এসে ভর্তি হন সিংগাইরের বায়রা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় রফিক ছিলেন মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র। তখন পড়াশুনার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকায় নিজেদের প্রেসে বাবার কাজে সহায়তা করতেন তিনি।
২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ হন রফিক।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/২২-০২-২০১৬ইং/মইনুল