muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

দেশে নতুন মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’

নিষিদ্ধ মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’ ও বিদেশি মদসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজন হলেন নাগিব হাসান অর্নব (২৫) ও তাইফুর রশিদ জাহিদ (২৩)।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উয়িংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০-এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে নাগিব হাসান অর্নব ও তাইফুর রশিদ জাহিদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বর্তমানের আলোচিত মাদক ম্যাজিক মাশরুমের পাঁচটি বারে ১২০টি পিস এবং ২ বোতল বিদেশি মদ। প্রতিটি বারে ম্যাজিক মাশরুমে পরিমাণ ২৫০০ এমজি।

র‌্যাব জানায়, ম্যাজিক মাশরুম একটি সাইকেলেডিক (হ্যালোসিনোজেন) ড্রাগ। এই ড্রাগটি বিভিন্ন খাবারে যেমন, কেক ও চকলেট মিক্স অবস্থায় সেবন করা হয়। এ ছাড়া পাউডার ক্যাপসুল হিসেবেও পাওয়া যায়। এই ড্রাগ ব্যবহারে সেবনকারীর নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এমনকি কেউ কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপিয়েও পড়তে পারে।

এটি সেবন কররে শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে মানসিক রোগ যেমন সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারণ হতে পারে। এই ধরনের অপ্রচলিত ড্রাগের চাহিদা তৈরি হয় মাদক সেবীদের নতুনত্বের প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে।

গ্রেপ্তার তাইফুর রশিদ জাহিন সম্পর্কে র‌্যাব জানায়, প্রথমে তিনি গাঁজা ও মদ্যপানে আসক্ত ছিলেন। এরপর তিনি ২০১৯ সালে ক্রমান্বয়ে এলএসডি, ডিএমটিসহ বিভিন্ন ধরনের সাইকেডেলিক ড্রাগ নিয়মিত সেবন ও বিক্রি করা শুরু করেন। সাইকেডেলিক ড্রাগ সম্পর্কে তার আগ্রহ সৃষ্টি হলে ইন্টারনেট থেকে সেই সাইকেডেলিক ড্রাগের উপরে অনুসন্ধান শুরু করে। এভাবে তিনি ম্যাজিক মাশরুম সর্ম্পকে অনলাইনে জানতে পারে।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার তাইফুর রশিদ জাহিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ জন্মানো বিভিন্ন মাশরুমের মধ্যে সাইকেডেলিক বা ম্যাজিক মাশরুম আছে কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে তিনি ব্যর্থ হওয়ার পর ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ করতে শুরু করেন। ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ পাওয়ার পর তিনি বিদেশে অবস্থানরত তার বন্ধু ও পরিচিতজনদেরকে ম্যাজিক মাশরুম বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

কানাডায় অবস্থানরত তার বাল্যবন্ধু গ্রেপ্তার নাগিব হাসান অর্নব অধিক মুনাফা লাভের আশায় তাইফুর রশিদ জাহিনের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। তাইফুর নাগিবকে জানান, তিনি ম্যাজিক মাশরুমের বারগুলো বাংলাদেশে বিক্রির ব্যবস্থা করবেন।

গত মে মাসে গ্রেপ্তার নাগিব হাসান ম্যাজিক মাশরুমের একটি চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে তাইফুর ও নাগিব এই ম্যাজিক বারগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। বিপদজনক এই ম্যাজিক মাশরুম সেবন করে তাইফুর নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং অত্যন্ত বিভৎসভাবে নিজেই নিজের হাতের বিভিন্ন অংশ ধারালো বস্তু দিয়ে কেটে ফেলেন। গ্রেপ্তারকৃত অর্নব ২০১৪ সালে কানাডায় গমণ করেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় একটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন শেষে কর্মরত রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানান, গ্রেপ্তারকৃত তাইফুরের সঙ্গে যোগসাজসে কানাডা থেকে তিনি ম্যাজিক মাশরুম কিনে নিয়ে আসেন এবং বাংলাদেশে চড়া মূল্যে বিক্রি করেন।

Tags: