রাজধানীর রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্পদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই তদন্ত করতে বলা হয়েছে। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
কয়েকজন ভুক্তভোগীর করা এক রিট আবেদনের শুনানি করে এমন আদেশ দেন আদালত। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এছাড়া দরবার শরীফের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আবেদনকারীদের মামলা প্রতারণামূলক কি-না, সিআইডিকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রাজারবাগ দরবার শরীফের মুরিদদের দ্বারা গায়েবি মামলার শিকার ভুক্তভোগীরা সম্প্রতি একটি রিট করেন। রিটকারীদের মধ্যে শিশু, মহিলা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদ্রাসার শিক্ষক ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাদের প্রত্যেকে রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর ও তাদের মুরিদদের হয়রানিমূলক মামলার শিকার।
মুরিদদের দিয়ে ৫৫ বছর বয়সী একরামুল হাসানের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা করেন পীর দিল্লুর রহমান। এর মধ্যে ধর্ষণ, মারধর, চুরি, মানব পাচারসহ নানা অভিযোগে ১৩টি জেলায় করা ২০টি মামলায় এক হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করেন একরামুল আহসান।
জামিনে বেরিয়ে গত ৭ জুন মিথ্যা উল্লেখ করে মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করলে সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
রিপোর্টে একরামুল আহসান নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় করা মামলার নেপথ্যে পীর ও তার অনুসারীদের জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে সিআইডির ওই প্রতিবেদনে। নির্দেশনা অনুযায়ী সিআইডি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর সেটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগে ৪৯টি মামলার পেছনে রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমানের সম্পৃক্ততা উঠে আসে।
রিপোর্ট দেখে আদালতের বিস্ময় প্রকাশ করার পর রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্পদের তথ্য চেয়ে নির্দেশনা চান রিটকারীরা।
রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব ও আইজিপিসহ মোট ২০ জনকে বিবাদী করা হয়।