বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে চলে গেলো ভারত। টানা তিন ম্যাচে জেতা ভারতের এখনো এক ম্যাচ খেলা বাকি। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ৯ উইকেটে লঙ্কানরা করেছিল ১৩৮ রান।
৪ বল হাতে রেখে ১৪২ রান করে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। লঙ্কান বোলাররা শুরুতে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের জয়টা কঠিন হয়নি। বিরাট কোহলি ৪৭ বলে অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংসে নিয়ন্ত্রণ করেছেন খেলা।
ফাইনালে ভারতের সঙ্গী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রত্যেকেরই। বুধবার পাকিস্তানকে হারালে বাংলাদেশের ফাইনাল নিশ্চিত। আর বাংলাদেশ হারলে তিন দলেরই সম্ভাবনা থাকবে। ৪ মার্চের শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান ম্যাচের জন্য তখন অপেক্ষা করতে হবে। ওই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতলে তিন দলের পয়েন্ট সমান ৪ হবে। নেট রান রেটে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট নির্ধারিত হবে তখন।
১৩৯ রানের টার্গেট ভারতের বিখ্যাত ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় না। কিন্তু ১৬ রানের মধ্যে তারা হারায় দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান (১) ও রোহিত শর্মাকে (১৫)। দুটি উইকেটই নেন পেসার নুয়ান কুলাসেকারা। মাঝারি টার্গেট জয় করতে তাড়াহুড়া করেনি ভারত। বিরাট কোহলি ও সুরেশ রায়না এরপর ৫৪ রানের জুটি গড়েছেন। বাউন্ডারি যখন আসে না তখন ভারতীয়রা স্ট্রাইক রোটেট করে পুষিয়ে নেন। এভাবেই চলছিল। রায়না (২৫) ফিরে আসেন ১২তম ওভারের শুরুতে, দলের ৭০ রানে।
এরপর যুবরাজ সিং নেমেই বাউন্ডারি দিয়ে শুরু করেছেন। অভিজ্ঞ রঙ্গনা হেরাথকে পরপর দুই বলে দুই ছক্কা মেরেছেন। কোহলি এই পর্যায়ে যুবরাজকে খেলতে দিয়েছেন। লঙ্কান বোলারদের চেষ্টার মাঝে দ্রুত ছুটেছেন যুবরাজ। অনেক দিন পর নিজের মতো খেলতে পেরেছেন। ১৮ বলে সমান ৩ চার ও ছক্কা মেরে ফেরার সময় যুবরাজের নামের পাশে ৩৫ রান। ভারত দাঁড়িয়ে ১২১ রানে। এরপর হার্দিক পান্ডিয়াকেও (২) হারিয়েছে ভারত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার দেরী হয়ে গেছে। শেষ ১২ বলে ১৪ রান দরকার ছিল। কোহলির নিয়ন্ত্রণে ছিল সবকিছু। অধিনায়ক এমএস ধোনি (৭*) এক ছক্কায় ব্যবধান আরো দুর করেছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। আগের দুই ম্যাচে সফল ছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে মাত্র ৪ রান করেই আশিস নেহরার শিকার হয়েছেন ম্যাচের তৃতীয় ওভারে। লঙ্কানদের টপ অর্ডার ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। ভিন্ন অ্যাকশনের জসপ্রিত বুমরাহের বলে এমএস ধোনিকে ক্যাচ দিয়েছেন শিহান জয়াসুরিয়া (৩)। তিলকারত্নে দিলশানকে ভালোই লাগছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়েছেন এই ম্যাচে। কিন্তু মিডিয়াম পেসার হার্দিক পান্ডিয়া ম্যাচে নিজের প্রথম বলেই অভিজ্ঞ দিলশানকে (১৮) তুলে নিয়েছেন।
৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। পরের আঘাতটিও পান্ডিয়ার। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও চামারা কাপুগেদারা ২৬ রানের জুটি গড়ে ধ্বসের মুখে বাধ দিয়েছিলেন। ম্যাথুস (১৮) দুটি বাউন্ডারি মেরে দিয়েছিলেন পান্ডিয়াকে। ওভারের শেষ বলে ম্যাথুসকে বোল্ড করে দিয়েছেন পান্ডিয়া।
কাপুগেদারা ও মিলিন্দা সিরিওয়ার্দানে এরপর আশা জাগালেন। দলকে নিয়ে গেলেন ১০০ পর্যন্ত। ১৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১০০। কিন্তু পরের ৮ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে লঙ্কানরা। সিরিওয়ার্দানে (২২), কাপুগেদারা (৩০) ফিরে গেলে থিসারা পেরেরা হামলা করলেন। ৬ বলে ১৭ রান করে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরলেন। যদিও আম্পায়ার ভুল করেছেন। আউট ছিলেন না পেরেরা। তবে এসবের যোগফলে যা হলো তাতে ভারতের দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইন আপের সাথে লড়ার মতো পুঁজি পেলো না শ্রীলঙ্কা। শেষ হাসিটা তাই ভারতের।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/01-03-2016/মইনুল হোসেন