‘আমি ডায়াবেটিসের রোগী। আমার জীবন তুচ্ছ করে মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমি কোনো অপরাধ করিনি, আর ভবিষ্যতেও করব না। রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদ যে প্রতারক তা আমার জানা ছিল না।’
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। শুনানিতে বিচারকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের মাধ্যমে করোনা টেস্ট করার অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু মানবসেবার নামে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য রিজেন্ট হাসপাতাল যে টাকা নিচ্ছিল সেটা আমার জানা ছিল না।
এরপর বিচারক তাকে প্রশ্ন করেন, সাহেদের সঙ্গে আপনার এতো মহব্বত কীভাবে হয়েছিল? জবাবে তিনি বলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার দিন সাহেদের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল। এরপর থেকে সাহেদের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমি আগে থেকে জানতাম না সাহেদ একজন প্রতারক।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আত্মসমর্পণ করে আজ বৃহস্পতিবার জামিন পান স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে জামিন দেন আদালত।
তার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ মজুমদার। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম। আজ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ২ নভেম্বর পর্যন্ত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।
চার্জশিটে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়ন না করা রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে অবৈধভাবে পারিতোষিক বাবদ রোগী প্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা নেন।